চাষের খেত জল থইথই। —নিজস্ব চিত্র।
খানিকটা উন্নতি হল ঘাটালের পরিস্থিতির। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জল কমতে শুরু করেছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে এবং জলাধার থেকে জল না ছাড়া হলে দু’তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।” তবে চাষের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে।
নাগাড়ে বৃষ্টি হলেই ফি বছর জলমগ্ন হয় ঘাটাল মহকুমা। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও জলাধারগুলি থেকে ছাড়া জলে ঘাটাল শহর-সহ মহকুমার তিনটি ব্লকের শতাধিক গ্রাম জলের দখলে চলে গিয়েছে। বন্যার জেরে সঙ্কট পানীয় জলেরও। বিদ্যুৎহীন বহু গ্রাম। শ’দুয়েক বাড়ি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চন্দ্রকোনায় দু’টি ঘাটালে দু’টি ফ্লাড শেল্টার খোলা হয়েছে। একরের পর একর জমির ফসলও জলের তলায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ধান ও অন্যান্য সব রকম চাষেই ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরও জানিয়েছে এই জলমগ্ন পরিস্থিতিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভবনা। দফতরের সহ কৃষি-অধিকর্তা (শষ্য সুরক্ষা) শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমরা যে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে ঘাটাল মহকুমায় ভালই ক্ষতি হয়েছে। তবে জেলার সব ব্লক থেকে এখনও রিপোর্ট আসেনি।” শুভেন্দুবাবু জানান, এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট ১৪ হাজার হেক্টর আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। আর ৯০০ হেক্টর সব্জির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, গোটা জেলার ১৩টি ব্লকে প্রায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর বিভিন্ন সব্জির খেত জলমগ্ন। এখনও পুরোপুরি সব খবর এসে পৌঁছায়নি। দফতরের আধিকারিক কুশধ্বজ বাগ বলেন, “জলমগ্ন হলেই সব্জির খেত নষ্ট হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। শুধু সব্জি নয়, ফুলেরও ক্ষতি হয়েছে। তবে সঠিক তথ্য এখনও আসেনি।”
উদ্বিগ্ন চাষিরাও। চন্দ্রকোনার পলাশচাবড়ির সব্জি চাষি হারাধন পাত্র, গুণধর সানকি, ঘাটালের মনসুকার ধান চাষি চঞ্চল কোটাল, দাসপুরের প্রভাস নায়েকদের মতো হাজার হাজার চাষির মাথায় হাত। প্রভাসবাবু বলেন, “তিন বিঘা আমনের চাষ করেছিলাম। গাছ বড় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আচমকা জল ঢুকে এখনই গাছের গোড়া পচতে শুরু করেছে। কী হবে ভেবে পাচ্ছি না।” সব্জি চাষি হারাধনবাবু বলেন, “সব্জি চাষ থেকেই সংসার চলে। আড়াই বিঘা জমিতে জলদি জাতের ফুলকপি, পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা, বেগুনের চারা লাগিয়েছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy