Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘুপচি ঘরেই মজুত দেদার শব্দবাজি

বুধবার শহরে একটি বাজির কারখানায় বিস্ফোরণের পরে ফের প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসীর একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, লাগাতার অভিযান চললে এ দিনের ঘটনা এড়ানো যেত।

বিস্ফোরণে তছনছ বাজির দোকান। —নিজস্ব চিত্র।

বিস্ফোরণে তছনছ বাজির দোকান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০০:০৭
Share: Save:

কোথাও আট ফুট বাই দশ ফুট। কোথাও তার চেয়ে একটু বড় ঘর। অভিযোগ, ঘুপচি ঘরে লাইসেন্সের পরোয়া না করেই ঘাটাল শহর-সহ মহকুমা জুড়ে বাজির কারখানার রমরমা কারবার চলছে। বুধবার শহরে একটি বাজির কারখানায় বিস্ফোরণের পরে ফের প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসীর একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, লাগাতার অভিযান চললে এ দিনের ঘটনা এড়ানো যেত।

পুলিশ প্রশাসন অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছে। লাইসেন্সহীন বাজির দোকানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে অভিযান শুরু হবে। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এ বার কড়াভাবেই অভিযান শুরু করা হবে। নিষিদ্ধ বাজি দোকানে দেখলেই গ্রেফতার করা হবে।” শহরের আড়গোড়ায় বাজি বিস্ফোরণ উস্কে দিয়েছে অনেকগুলি প্রশ্ন। প্রথমত, পুলিশের দাবি, দোকানটি বাজি মজুত রাখার লাইসেন্স ছিল না। উপরন্তু সেখানে ডাঁই করে রাখা হয়েছিল নিষিদ্ধ বাজি। কোনওরকম সতর্কতা নিষিদ্ধ বাজি মজুত রাখার ফলে ঘটেছে দুর্ঘটনা। তবে শুধু আড়গোড়া নয়। অভিযোগ, শহরের প্রাণকেন্দ্র কুঠিবাজার-সহ বিভিন্ন প্রান্তে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি হয়। কোথাও প্রকাশ্যে। আবার কোথাও আড়ালে। জোগান কম। কিন্তু বিয়ে, পুজো-সহ নানা অনুষ্ঠানে চাহিদা বেশি। তাই বেশি মুনাফার লোভে অনেকেই এই পেশার দিকে ঝুঁকছেনও। গাছ বোমা, দোদমা, চকলেট বোমা তো দূর অস্ত,আতসবাজি বিক্রি করলেও জরুরি লাইসেন্স। প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেওয়ার পর পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে জেলাশাসকের দফতর থেকে এই লাইসেন্স পাওয়া যায়। কিন্তু অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে কোনওরকম লাইসেন্স ছাড়াই চলছে আতসবাজির ব্যবসা। কিছু ক্ষেত্রে আতসবাজির লাইসেন্স নিয়ে দিব্যি চলছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটালের কুঠিবাজারের এক বাজি ব্যবসায়ী বলেই ফেললেন, “আমি লাইসেন্স ছাড়াই প্রায় কুড়ি বছর ধরে নিষিদ্ধ বাজি ব্যবসা করছি। খুচরো ও পাইকারি সবই বিক্রি হয় দোকানে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ঘাটাল শহর সহ চন্দ্রকোনা, দাসপুর, সাগরপুর- সহ মহকুমার অধিকাংশ দোকানেই লাইলেন্স ছাড়াই আতসবাজি বিক্রি হয়। টাকা দিলেই মেলে শব্দবাজিও।

এ দিন বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, শহরের অধিকাংশ জায়গা থেকে শোনা গিয়েছে শব্দ। বিস্ফোরণস্থলের অদূরেই থানা। তাই কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল পুলিশ। পৌঁছেছিলেন দমকলকর্মীরাও। কিন্তু কান ফাটানো শব্দে নাগাড়ে ফাটছে শব্দবাজি—এ দৃশ্য দেখা ছাড়া কারওই কিছু করার ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE