মেদিনীপুর মেডিক্যালের প্রবেশপথের সামনে দাঁড়িয়ে টোটো। নিজস্ব চিত্র
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সামনের রাস্তায় আসতে গিয়ে হোঁচট খেলেন গৌর মাহাতো। প্রধান ফটকের সামনে কয়েকটি টোটো দাঁড়িয়ে। অদূরে অটো। হাসপাতালে ভর্তি পরিজনের জন্য ওষুধ কিনতেই বেরিয়েছিলেন শালবনির বাসিন্দা গৌর। তাঁর কথায়, “হাসপাতাল চত্বরে তো পথ চলাই দায়। যেখানে-সেখানে সাইকেল-মোটরবাইক দাঁড় করানো। হাসপাতালের মধ্যে টোটোও ঢুকে পড়ছে। গেটের সামনে এত ঝুপড়ি। মানুষ চলাফেরা করবে কীভাবে?” শুধু গৌরবাবু নন, রোজ এ ভাবেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে হোঁচট খাচ্ছেন কয়েকশো রোগীর পরিজন।
সমস্যা যে গুরুতর তা মানছে হাসপাতালও। হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার কথায়, “সমস্যার কথা অজানা নয়। দিন কয়েক আগে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকেও এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। সমস্যার সমাধানে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এখন জেলাশাসকই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশে এখন মাঝে মধ্যেই আচমকা পরিদর্শন হয় হাসপাতালে। পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরা। পরিদর্শনে সামনে আসে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি। উঠে আসে বিভিন্ন সমস্যা। সেই সব সমস্যা নিয়ে সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়। হাসপাতালের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিদর্শক দলেরও নজর এড়ায়নি।
প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “প্রধান ফটকটি নতুন করে তৈরি হয়েছে। দু’পাশেও গুমটি তৈরি হচ্ছে। এরফলে, চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে। এটা অনভিপ্রেত। নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হাসপাতালের এক কর্তাও মানছেন, “হাসপাতালের পাশে জবরদখল দিনে দিনে বাড়ছে। সঙ্কীর্ণ রাস্তা। সেই রাস্তার দু’ধারে ছোট- বড় বেশির ভাগ ঝুপড়িই রাস্তার ওপর উঠে আসছে। ফলে, চরম সমস্যায় পড়ছেন পথচলতি মানুষ। বিশেষ করে রোগী এবং রোগীর পরিজনেরা।” হাসপাতালে ঢুকতে-বেরোতে রোজ ঠোকাঠুকিও লাগছে। অ্যাম্বুল্যান্সও ঢুকতেও সমস্যায় পড়ে।
জেলার সবথেকে বড় সরকারি হাসপাতাল এই মেদিনীপুর মেডিক্যালই। মেদিনীপুরের এই হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যাও কম নয়। ৬৬০টি শয্যা রয়েছে। দিনে গড়ে রোগী ভর্তি থাকেন ৭৫০-৮০০ জন। মাসে বহির্বিভাগে রোগী আসেন গড়ে ১৫ হাজার ৯০০ জন। মাসে জরুরি বিভাগে গড়ে রোগী আসেন ৬ হাজার ৫৭০ জন। হাসপাতালের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রচুর মানুষ আসেন। ফলে, হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনেটা একেবারে ঘিঞ্জি হয়ে গেলে সমস্যারই। ঢুকতে-বেরোতে অসুবিধা হবেই।” অনেক সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে। কেন প্রধান ফটক খোলামেলা রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? সদুত্তর এড়িয়ে হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তিবাবুর জবাব, “সমস্যার সমাধানে আগেও পদক্ষেপ করা হয়েছিল। ফের হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy