শক্তিরূপেণ: খড়্গপুর মালঞ্চয় বাড়ির পুজোয়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
ক’দিন আগেই তো জল থৈ থৈ করছিল শহর। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। সাপের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে ছিলেন মানুষ। একবার মনে হয়েছিল এ বার যেন আর দুর্গা আসবেন না এই দেশে। কিন্তু কে বলবে সে কথা! পঞ্চমী থেকে সে সব দিনের কথা ভুলে গিয়েছে ঘাটাল। ওই দিনেই উদ্বোধন হয়েছে একাধিক পুজোর। রাস্তায় নেমেছে মানুষের ঢল। আর সেই দৃশ্য দেখে ষষ্ঠীর বিকেল থেকেই মহকুমার রাস্তা চলে গিয়েছে পুলিশের দখলে। শুরু হয়ে যায় যান নিয়ন্ত্রণ।
হাসপাতাল মোড়ের এক বিরিয়ানির দোকানে দাঁড়িয়ে কলেজ পড়ুয়া দুই তরুণীর কথায় বোঝা গেল আসল তত্ত্ব। তাঁরা বললেন, ‘‘জলে ডোবা ঘাটালে এখন প্রখর রোদ। আবার নাকি বৃষ্টি নামতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি পারি ঠাকুর দেখে নিই। যতটুকু আনন্দ করা যায়।’’
ঘাটাল মহকুমায় এ বার ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় শ’দেড়েক পুজো হচ্ছে। প্রায় ২০-২২টি বিগ বাজেটের পুজোও হচ্ছে। তবে ভিড় টানতে পিছিয়ে নেই ছোট বাজেটের পুজোগুলিও। পঞ্চমীর বিকেলে উদ্বোধনের আগেই সার্কাস থিমের মণ্ডপ দেখতে ভিড় উপচে প়ড়েছিল কুশপাতা পঞ্চপল্লির পুজোয়। একই ছবি ছিল ঘাটালের হরিশপুর, মনসুকা থেকে দাসপুরের পাঁচবেড়িয়া, চাঁইপাট, লঙ্কাগড়, সোনাকালি, সুলতাননগর প্রভৃতি মণ্ডপগুলিতেও। ষষ্ঠীতেও বেশ কিছু মণ্ডপের উদ্বোধন হয়েছে। হরিশপুর ফ্রেন্ডস ক্লাব শুকনো ফল দিয়ে তৈরি করেছে মণ্ডপ। ঘাটাল শহরের সারদা পল্লির এবার আকর্ষণ সংসদ ভবন।
তবে গত দু’দিনের ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল বাসিন্দারা। তবু গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড এবং চন্দ্রকোনার মণ্ডপেও একই ছবি। পঞ্চমীর সন্ধ্যা থেকেই ভিড় ছিল হুমগড়, আমলাশুলি, চন্দ্রকোনা রোড আদি দুর্লভগঞ্জ, স্টেশনপাড়া সবর্জনীনে।
পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া মহকুমার বেশিরভাগ পুজোই উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে পঞ্চমীতে। ষষ্ঠীর সকাল থেকেই মানুষ মণ্ডপমুখী। তবে যান নিয়ন্ত্রণে মহকুমা পুলিশ খানিক ব্যর্থই বলা যায়। বিশেষত রানিচক এলাকার যানজটে নাভিশ্বাস শহরের।
পঞ্চমীর রাতে হলদিয়ার হাজরা মোড় মৈত্রীভূমি, নবতারা ও ক্ষুদিরাম স্কোয়ার-সহ একাধিক মণ্ডপের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও চিত্রাভিনেত্রী রাইমা সেন। শহর জুড়ে থিমের পুজোর ছড়াছড়ি। বড় বাজেটের পুজোর পাশাপাশি ছোট গ্রামীণ পুজোও নজর কেড়েছে।
তমলুকে আবার বেশির ভাগ পুজোর উদ্বোধনই হয়েছে ষষ্ঠীর দিন। তবে অলস্টার, নটিবয়, ওয়ান হার্টেড ক্লাবের পুজো দেখতে পঞ্চমীর সন্ধ্যাতেও হাজির হয়েছিলেন স্থানীয়রা। ষষ্ঠীতেও ব্যতিক্রম হয়নি। পাঁশকুড়ার পুরাতন বাজার, মেচেদা, কোলাঘাটের মণ্ডপগুলিতেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপচে পড়েছে ভিড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy