Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Nandigram

নন্দীগ্রামে সিপিএমের দেওয়াল লিখনের উপর কালি এবং কাদা! শুরু রাজনৈতিক চাপান-উতোর

সিপিএমের অভিযোগ, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রামে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে বামেরা। তাই শাসকদল ভয় পেয়েছে। সেখান থেকে এমন কর্মকাণ্ড করছে তারা।

Row over smutting on CPIM’s wall writing in Nandigram

এই কালি লেপার ঘটনার দায় নিতে নারাজ তৃণমূল এবং বিজেপি। তারা সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৩৭
Share: Save:

রাতের অন্ধকারে সিপিএমের দেওয়াল লিখনের ওপর কালি লেপে দেওয়ার অভিযোগে রাজনৈতিক শোরগোল নন্দীগ্রামে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের বয়াল পঞ্চায়েতের মঙ্গলক বুথ এলাকায়। এ নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপিকে একত্রে নিশানা করেছে সিপিএম। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল এবং বিজেপি এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। যদিও এই কালি লেপার ঘটনার দায় নিতে নারাজ ওই দুই দল। তারা সিপিএমের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে।

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা কমিটির সদস্য পরিতোষ পট্টনায়েকের কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে বিজেপি এবং তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। যার ফলে বিজেপি তৃণমূলকে ‘সেট’ করে এবং তৃণমূল বিজেপিকে ‘সেট’ করে চলতে চাইছে। কিন্তু মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। দুই দলের বিরুদ্ধে জোট বাঁধছে মানুষ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন এলাকায় এলাকায় বামেদের সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। তাই কোথাও কাদা এবং কালি লেপে দেওয়া হচ্ছে।’’ সিপিএমের দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রামে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে বামেরা। তাই শাসকদল ভয় পেয়েছে।

যদিও গোটা ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলে তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘সিপিএমের দেওয়াল লিখন কে লিখল, কে মুছল, তার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ বাপ্পাদিত্যের কটাক্ষ, ‘‘নন্দীগ্রামের গণহত্যার ইতিহাস আজও এলাকাবাসীর মনে টাটকা। তাই নন্দীগ্রামে দেওয়াল লিখনের নৈতিক অধিকারই নেই সিপিএমের। বামেদের মনে করাতে চাই, গণতান্ত্রিক ভাবে তারা লড়াই করতেই পারে। কিন্তু নন্দীগ্রামে নৈতিক ভাবে ওরা অপাঙ্‌ক্তেয়। তাই মিথ্যে অভিযোগ করে খবরের শিরোনামে থাকতে চাইছে ওরা।’’

নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা প্রলয় পাল বলেন, ‘‘বিজেপি সৌজন্যের রাজনীতি করে। এই কাজ সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। যারা এই কালি লেপে দেওয়ার কাজ করেছে, তাদের সমর্থন করি না। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’

বাংলায় দীর্ঘ বাম শাসনে নন্দীগ্রামকে ‘বাম দুর্গ’ হিসেবেই দেখা হত। গোটা নন্দীগ্রামের কোথাও বিরোধী-অস্তিত্ব ছিল না। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের সাড়ে ১২ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে এখানে এসইজেড আইনের মাধ্যমে মেগা কেমিক্যাল হাব গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় বামফ্রন্ট সরকার। আর এতেই বেঁকে বসে এলাকাবাসী। নন্দীগ্রাম জুড়ে জমি বাঁচাতে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী আন্দোলন। এই আন্দোলনই ২০১১ সালে এ রাজ্যে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আসার ভিত প্রস্তুত করে দিয়েছিল। তবে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে নিয়োগ দুর্নীতি, বেকারত্ব-সহ নানা ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে বামেরা। নন্দীগ্রামেও একের পর এক সভা করছে সিপিএম। তাই প্রায় নিত্যদিন রাজনৈতিক চাপান-উতোরের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে সেই নন্দীগ্রাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nandigram CPM TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE