চিকিৎসা: হাসপাতালে অসুস্থ ছাত্রছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
ডালে টিকটিকি পড়ে গিয়েছিল। মিড ডে মিলের সেই ডাল খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়ল শতাধিক পড়ুয়া। মঙ্গলবার চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের ডুমুরগেড়িয়া জুনিয়র হাইস্কুলের এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে দিল কতটা অযত্নে, কতটা অসাবধনতায় স্কুলে মিড ডে মিল রান্না হয়। আর বিপদের মধ্যে পড়ে খুদে পড়ুয়ারা।
এ দিনের ঘটনায় ডুমুরগেড়িয়া জুনিয়র হাইস্কুলের যে সব পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, তাদের স্থানীয় দ্বাড়িগেড়িয়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “৭০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বাকি বেশ কিছু ছাত্রেরও প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। তবে সকলেই এখন বিপদমুক্ত।” খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
রাজ্যের নানা প্রান্তে মিড ডে মিলে বিষক্রিয়ার ঘটনা হামেশাই সামনে আসে। শুধু স্কুল নয়, অঙ্গনওয়াড়িতেও এমন ঘটনা ঘটে। কখনও ভাত রান্নার সময় সিদ্ধ হয়ে যায় পোকাপাকড়, কখনও বা ডালে ভাসে টিকটিকি। এ দিন তেমনটাই হয়েছে ডুমুরগেড়িয়া জুনিয়র হাইস্কুলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের নয়াবসত পঞ্চায়েতের এই স্কুলে এ দিন রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান ছিস। অনুষ্ঠান শেষে মিড ডে মিল খাওয়ানো হয়। পাতে ছিল ভাত, ডাল, ডিমের ঝোল আর মিষ্টি। ছাত্রছাত্রীরা সকলে একসঙ্গে বসে খাচ্ছিল। অভিযোগ, ডালের পাত্রে টিকটিকি পড়ে যায়। তারপর সেই ডালই খাওয়ানো হয় খুদে পড়ুয়াদের। যদিও স্কুলের টিচার ইন-চার্জ সমীরণ আচার্যের দাবি, “খাবার পরিবেশনের সময় ডালে টিকটিকি পড়ে গিয়েছিল। বিষয়টি জানতে পেরেই খাবার পরিবেশন বন্ধ করে দিই। যে ছাত্রেরা বমি করছিল তাদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করি।”
ক্ষুব্ধ অভিভাবক থেকে এলাকাবাসী সকলেরই অভিযোগ, অযত্নে রান্না ও পরিবেশন করাতেই এমন ঘটনা ঘটছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সক্রিয়তারও দাবি উঠেছে। গড়বেত ৩-এর বিডিও তথা সংশ্লিষ্ট প্রকল্প আধিকারিক শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “ডুমুরগড়িয়া স্কুলের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো জানিয়েছেন, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যৌথভাবে তদন্ত করছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “আমরা খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” কী ভাবে ডালে টিকটিকি পড়ল, তা স্কুল কর্তৃপক্ষও খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন টিচার ইন-চার্জ সমীরণবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy