মেদিনীপুরে চলছে অর্থ সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র।
কৌটো হাতে মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে এক দল যুবক-যুবতীকে। ক্যানসার আক্রান্ত এক কলেজ ছাত্রীর জীবন-যুদ্ধে পাশে দাঁড়াতেই অর্থ সংগ্রহে পথে নেমেছে ওরা। ঘুরছে রাস্তায় রাস্তায়। যাচ্ছে ক্যাম্পাসে। পথচলতি মানুষ থেকে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
মাস চারেক আগে পেটে ক্যানসার ধরা পড়ে মেদিনীপুর কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী মৌমিতা মান্নার। সবংয়ের বলরামপুরের বাসিন্দা মৌমিতা তিন বোনের মধ্যে মেজো। তাঁর বাবা পূর্ণচন্দ্র মান্না গ্রামে গ্রামে মাদুর ফেরি করেন। সামান্যই আয়। মেয়ের চিকিৎসার ভার সামলাতে তিনি অপারগ। আর সে কথা জেনেই অর্থ সংগ্রহে ঝাঁপিয়েছে ‘ছাত্র সমাজ’ নামে মেদিনীপুরে এক সংগঠন রয়েছে। তাদের উদ্যোগেই চলছে অর্থ সংগ্রহ। মানবিকতা আর ক্যানসারে আক্রান্ত ছাত্রীর পাশে থাকার তাগিদে অর্থ সংগ্রহ করছেন স্বপন দাস, কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তীরা। ছাত্র সমাজ-এর সভাপতি কৃষ্ণগোপাল, সম্পাদক স্বপন বলছেন, “আমরা যতটা সম্ভব মৌমিতাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।”
মৌমিতা এখন কলকাতার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৌমিতাকে ৬টি কোমো থেরাপি দিতে হবে। ইতিমধ্যে দু’টি কেমো দেওয়া হয়েছে। ফলে, চিকিৎসার খরচ বিস্তর। কিন্তু মেদিনীপুরের একাংশ ছাত্রছাত্রী যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে আশার আলো দেখছেন পূর্ণচন্দ্রবাবু। তিনি বলেন, “মেয়েকে সুস্থ করে তুলতে যত দূর যাওয়ার যাব। শুধু একটু সাহায্য চাই সকলের কাছ থেকে।” তাঁর আরও সংযোজন, “ছাত্রছাত্রীরা এ ভাবে পাশে দাঁড়ানোয় জোর পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, যেমন করেই হোক টাকাটা ঠিক জোগাড় করতে পারব।” মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরারও বক্তব্য, “সামর্থ্যের মধ্যে থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা মৌমিতাকে সাহায্য করেছি। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করি, ও দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।”
আশাবাদী মেদিনীপুর ছাত্র সমাজও। তাঁদের আশা, এই মেধাবী ছাত্রী মারণ রোগকে হেলায় হারাবেন। সংগঠনের সহ-সম্পাদক রাজকুমার বেরা বলছেন, “আমরা জানি যে বিপুল পরিমাণ টাকা ওর চিকিৎসায় প্রয়োজন, তুলনায় সাহায্য উঠবে খুবই কম। তবু যতটুকু পাশে থাকা যায়, সেই চেষ্টাই করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy