জঙ্গলমহলের মন বুঝতে মরিয়া শাসক। মুখ বন্ধ খামে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের ব্লক-ভিত্তিক বিপর্যয়ের রিপোর্ট যাচ্ছে রাজ্যে! আবার দলীয় পর্যালোচনা করতে আজ, বুধবার ঝাড়গ্রামে আসছেন মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলের বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূলের ফল সন্তোষজনক নয়। শুরু হয়েছে ময়নাতদন্ত। জেলা নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, দলের তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও অন্তর্ঘাতের ফলেই খারাপ হয়েছে ফলাফল। পর্যালোচনার ভিত্তিতে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়গুলি উঠে আসায় প্রতিটি অঞ্চল ও ব্লক স্তরের সভাপতিদের কাছ থেকে মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট চেয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি। দলীয় সূত্রের খবর, দলের অন্দরে ক্ষোভ বিক্ষোভ ঠেকাতেই এমন উদ্যোগ। যদিও জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “স্বচ্ছতার জন্যই মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেই মুখ বন্ধ খাম দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আমরা চাই প্রকৃত তথ্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পৌঁছক।”
তবে এমন মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কর্মীদের একাংশ। কারণ, কর্মীদের বক্তব্য, অঞ্চল ও ব্লক স্তরের বৈঠকে সবপক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে এই মুখ বন্ধ খামের রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কর্মীদের একাংশ।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য শুধু রিপোর্টের উপরই ভরসা করছেন এমন নয়। আজ ঝাড়গ্রামের জামদা কমিউনিটি হলে ব্লক ও অঞ্চল স্তরের সভাপতি এবং দলের জেলা স্তরের নেতা ও জন প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবেন পার্থবাবু। বোঝার চেষ্টা করবেন ঠিক কোথায় খামতি রয়ে গিয়েছে।
ইতিমধ্যে ব্লক ভিত্তিক পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। ২০১১ সাল থেকে কেবলমাত্র ঝাড়গ্রামের আটটি ব্লকে যে পরিমাণ উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এমন ফল রীতিমত হতাশাজনক বলে শাসকদলের পর্যালোচনা বৈঠক গুলির আলোচনায় উঠে এসেছে।
কিন্তু কেন এই খারাপ ফল? শাসক দল সূত্রের খবর, বহু পর্যালোচনা বৈঠকে নিচুতলার কর্মীরা ‘অন্তর্ঘাতে’র অভিযোগ তুলেছেন। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলির নেতা কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। পরে তাঁরা শাসকদল থেকে সরে যান।
শাসক দলের নিচুতলার একাংশ বলেছেন, মুখবন্ধ খামে নেতাদের মনের হদিস মিললেও মিলতে পারে। কিন্তু এখন সবার আগে প্রয়োজন মানুষের মনের খবর নেওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy