বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের সভা। অথচ সেই সভায় গরহাজির দলের অধিকাংশ জেলা নেতা-নেত্রী। আসেননি বিজেপির জেলা সভানেত্রীও। উল্টে হাজির ছিলেন জেলার প্রাক্তন সভাপতি। ডেবরায় বিজেপি-র এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসার পরই দলের জেলা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ও জেলা সহ-সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল!
শনিবার রাতে ডেবরায় বিজেপির ঘাটাল জেলা কমিটির বৈঠক হয়। সেখানেই বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী শোভা সাঁতরা ও দলের জেলা সহ-সভাপতি অখিল ঘোড়ইকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার ডেবরার ধামতোড়ে মুকুলের সভার পরই এই পদক্ষেপ। বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রীর অনুমোদন নিয়েই শোভা সাঁতরাকে মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে।” একই অভিযোগে ওই সভার আয়োজক তালিকায় নাম থাকায় জেলার সভা-সভাপতি অখিল ঘোড়ইকে পদ থেকে সরানো হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকারও করেছে আয়োজক মহিলা মোর্চা কমিটি। শোভা বলেন, “আমরা অন্তরাদি-সহ রাজ্য থেকে জেলার সব নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। তার পরেও আমাদের পদ থেকে সরিয়ে দিলেন অন্তরাদি। আসলে উনি সিপিএম থেকে এসেছেন। আমরা পুরনো বিজেপি কর্মী। তাই প্রাক্তন জেলা সভাপতি রতন দে-র সঙ্গে যাঁরা এতদিন দলের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের হটিয়ে নতুনদের আনতে উনি উঠেপড়ে লেগেছেন।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বে ভাঙন দেখা যায়। জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রতন দত্তকে। ওই পদে আসেন সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি অন্তরা। এর পরই অন্তরার সঙ্গে রতনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। রতন অনুগামী পুরনো বহু নেতা-নেত্রীই দলে রয়েছেন। সেই তালিকায় ছিলেন শোভা ও অখিল।
মুকুলের সভার আয়োজন করেছিল মহিলা মোর্চা। সহযোগিতায় ছিলেন রতন অনুগামীরা। এতেই বিরোধ বাধে। সভায় বিজেপির জেলা সভানেত্রী অন্তরা না আসায় জল্পনা শুরু হয়। তাঁকে ডাকা হয়নি বলে ক্ষোভও জানান অন্তরা। তারপরই এই সিদ্ধান্ত। এ প্রসঙ্গে রতনের বক্তব্য, “আমাকে সরিয়ে অন্তরা ভট্টাচার্যকে সভানেত্রী করা হলেও আমি বলেছিলাম সহযোগিতা করব। কিন্তু পরে দেখলাম আমাদের পুরনো লোকেদের বাদ দিয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তার পরেও কেন এমন সিদ্ধান্ত বুঝতে পারছি না।”