Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ

বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে টালবাহনার অভিযোগ তুলল বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০০:২৮
Share: Save:

বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে টালবাহনার অভিযোগ তুলল বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। পরে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সমিতির জেলা সম্পাদক আনন্দ হান্ডার অভিযোগ, “প্রায় তিন বছর আগে শিক্ষা দফতর জানিয়েছিল, ২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের পর নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে যাদের বিএড প্রশিক্ষণ রয়েছে, এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছ’মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ চলতি বছর জানুয়ারি মাসে নিযুক্ত প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্য শিক্ষা দফতর উদ্যোগী হয়েছে।” আনন্দবাবুর অভিযোগ, “২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এরকম প্রায় ৩৫০ জন বিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। তাঁরা বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও সাধারণ শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ফলে এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে এখনও বেতন ক্রম পাননি।”

সমিতির অভিযোগ, এনসিটিই’এর নিয়মানুযায়ী বিএড প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছ’মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিলে তাঁদের প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে গণ্য করা হবে। আগামী ২০১৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট রয়েছে। কিন্তু ওই সময়সীমা প্রায় শেষ হতে চললেও শিক্ষা দফতর তাঁদের প্রশিক্ষণের জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।

কোলাঘাটের জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রবীর মাইতি বলেন, “২০০২ সালে আমি প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলাম। আমার বিএড প্রশিক্ষণ রয়েছে। কিন্তু আমরা প্রশিক্ষনহীন শিক্ষক হিসেবে গণ্য হচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।” ভগবানপুরের তালদা স্পেশাল প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক গোকুল মুড়া বলেন, “বিশেষ প্রশিক্ষণ না পাওয়ার ফলে যোগ্যতা থাকা সত্বেও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে বেতন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আর দশ বছরের বেশি শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারছি না। আর ২০১৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ না পেলে প্রশিক্ষণহীন হিসেবে চাকরি থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মানসকুমার দাস এবিষয়ে বলেন, “আমাদের কাছে ২০১৪ সালে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দূরশিক্ষার মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য অনুমতি এসেছে। এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ২০১৪ সালের আগে নিযুক্ত বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য এখনও অনুমতি পাওয়া যায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

b.ed primary teachers tamluk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE