Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ফের খনন হবে মোগলমারিতে

রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে দ্বিতীয় পর্যায়ের খননকার্য শুরু হতে চলেছে মোগলমারি বৌদ্ধবিহারে। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সম্প্রতি এই খননের অনুমতি দিয়েছে। চলতি মাসের শেষেই খননকাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।

মোগলমারিতে খননকার্য। —ফাইল চিত্র।

মোগলমারিতে খননকার্য। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১৯
Share: Save:

রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে দ্বিতীয় পর্যায়ের খননকার্য শুরু হতে চলেছে মোগলমারি বৌদ্ধবিহারে। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ সম্প্রতি এই খননের অনুমতি দিয়েছে। চলতি মাসের শেষেই খননকাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের মোগলমারিতে সখীসেনা ঢিবিতে গত বছর মার্চ থেকে খননকাজ বন্ধ ছিল। এরপর রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ পুনরায় খননের জন্য আবেদন করে। গত ৭ জানুয়ারি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ আবেদন মঞ্জুর করেছে। রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধিকর্তা পিয়ালী সেনগুপ্ত বুধবার বলেন, “ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ থেকে মোগলমারিতে খননকাজ চালানোর অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি আগামী সোমবারের মধ্যে আমার কাছে সেই কাগজ এসে পৌঁছবে। তারপর দ্রুত খনন শুরু হবে।” রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা প্রভাকর পালের বক্তব্য, “ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের দফতর থেকে অনুমতিপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও ডাকযোগে তা এসে পৌঁছয়নি। তবে সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে অনুমতিপত্রের প্রতিলিপি নিয়ে এসেছি। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে খননকাজ শুরুর ভাবনা রয়েছে।”

২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগ ছ’দফায় খনন চালায় মোগলমারিতে। আবিষ্কৃত হয় বৌদ্ধস্তূপ। তখন পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক অশোক দত্ত এই বৌদ্ধস্তূপকে হিউয়েন সাং বা জুয়ান জ্যাং বর্ণিত তাম্রলিপ্ত এলাকার একটি ‘বৌদ্ধবিহার’ বলে দাবি করেছিলেন। ছ’দফার খনন-পর্বে পাওয়া যায় স্ট্যাকোর অলঙ্কৃত দেওয়াল, মূর্তি, ৪২ রকমের কারুকার্যে মোড়া ইট, পোড়ামাটির কিছু বাসনপত্র, ২০টি উৎসর্গ ফলক ইত্যাদি।

২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে ফের খনন শুরু হয়। তখন গুপ্ত-উত্তর যুগের একটি মিশ্রিত ধাতুর মুদ্রা ও একটি সোনার লকেট পাওয়া যায়। বছর ঘুরতেই রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উপ-অধিকর্তা প্রয়াত অমল রায়ের তত্ত্বাবধানে চলা খননকাজে মেলে শ্রীবন্দক নাম ফলক। সেটি অন্যতম সাফল্য। তবে গত বছর ৫ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় খননকাজ। গত বছর ২২ জুলাই অমলবাবু মারা যান। এরপর ওই ক্ষেত্রের সংরক্ষণেও সমস্যা দেখা দেয়। গত বছর বর্ষায় ক্ষতি হয় বৌদ্ধ বিহারের কিছু অংশের। সেই সময়ই কেন্দ্রের কাছে খননের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানায় রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ।

রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ওই আবেদন জানানো হয়েছিল। এতদিনে তাতে সাড়া দিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। দ্বিতীয় পর্যায়ের খননে পুরাতত্ত্ববিদ প্রকাশ মাইতিকে ডিরেক্টর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রকাশবাবুর কথায়, “এখনও পর্যন্ত মোগলমারির ওই বিহারে ১০ শতাংশ খনন হয়েছে। এই পর্যায়ের খননে আমরা বৌদ্ধবিহারের স্থাপত্যরীতি, তাম্রপত্রের খোঁজ চালাব। এ ছাড়াও বহু মূল্যবান পুরাবস্তু উদ্ধারের আশা করছি।” ফের খনন শুরু হবে জেনে খুশি স্থানীয় তরুণ সঙ্ঘের যুগ্ম-সম্পাদক অতনু প্রধান। তাঁর বক্তব্য, “আগামী পর্বের খননে আরও অনেক পুরাতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধার হবে যা মোগলমারি বৌদ্ধবিহারের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kharagpur mogolmari excavation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE