পণের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির চার ব্যক্তির। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুজয় সেনগুপ্ত শুক্রবার নন্দকুমার থানার শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইউসুফ, শেখ জব্বর, আসিয়া বিবি ও শেখ রহমানকে এই কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের যুবক শেখ ইউসুফের সঙ্গে ওই থানা এলাকার বরগোদা গ্রামের মেয়ে নাসিমা বিবির প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল ২০০৬ সালে। কিন্তু বিয়ের পর নাসিমার শ্বশুরবাড়ির তরফে এক লক্ষ টাকা পণ চাওয়া হয়। দাবি মত টাকা দিতে না পারায় ওই গৃহবধূর উপর অত্যাচার করা হত বলে অভিযোগ। ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে নাসিমাকে তাঁর স্বামী-সহ শশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে টাকার জন্য। সেই সময় নাসিমার বাবা কর্মসূত্রে হরিদ্বারে ছিলেন। তাই নাসিমা বরগোদা গ্রামে থাকা জ্যাঠার কাছে গিয়ে টাকা চান। সেখানেও টাকা না পেয়ে ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন নাসিমা। ওই দিন রাতেই স্বামী-সহ শশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে ওই গৃহবধূকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতলে ভর্তি করেন। কয়েকদিন পর ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে তাঁর স্বামী, শশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী উত্তরসখা বেরা জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে মামলায় শুনানির পর নাসিমার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক গৃহবধূকে খুনের দায়ে ওই চারজনের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy