সবংয়ে আদিবাসী সম্মেলনে মানস ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র।
দু’জনেই নিজের দুনিয়ায় তারকা।
একজনের একের পর এক সিনেমা সুপারহিট। জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অন্যজন ৭ বার লড়ে ৬ বার বিধায়ক। মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন কিছুদিন।
একজন দেব (দীপক অধিকারী)। অন্যজন মানস ভুঁইয়া।
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের ঘোষিত তৃণমূল প্রার্থী দেব। কংগ্রেস এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তাতে কী? মানসবাবুর বিধানসভা এলাকা সবংয়ে কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘাটাল কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে সবং। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে একমাত্র সবংই দখলে রেখেছে কংগ্রেস। জেলায় বিরোধীদের দখলে থাকা একমাত্র পঞ্চায়েত সমিতিও এটি।
ঘাটালে কংগ্রেস প্রার্থী মানসবাবু হবেন কিনা, জানা নেই। তৃণমূলও প্রচার শুরু করেনি। তবু সবংয়ের অলিতেগলিতে সকলে জানেন তৃণমূল প্রার্থী দেবের নাম। চা দোকানে, রাস্তার আড্ডায় শুধুই দেব-চর্চা। তৃণমূল নেতা প্রভাত মাইতি, অমূল্য মাইতিরা ফোনের চোটে হাঁপিয়ে উঠছেন। সকলেরই প্রশ্ন, কবে দেব আসবেন।
কংগ্রেসের লড়াইটা এখানেই। তাদের লক্ষ্য সবংয়ে দলের গড় রক্ষা। ঘাটালে কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া হন বা জগন্নাথ গোস্বামী, তাতে কিছু যায় আসে না। তাই প্রার্থীর নাম ঘোষণার আগেই কংগ্রেস প্রচার শুরু করে দিয়েছে। তাতে হাজির থাকছেন মানসবাবুও। বলছেন, “এটা নীতি, আদর্শের লড়াই। সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তা করতে হলে কংগ্রেসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সে লড়াই শুরু হোক সবং থেকেই।” তৃণমূলকে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না। বলছেন, “নীতি, আদর্শের লড়াইয়ের জন্য নায়ক-নায়িকা লাগে না, দেব-দেবীও লাগে না।”
এ বার নেতাদেরই ভোটের ময়দানে নামতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা রাহুল গাঁধী। সেই সূত্রে মানসবাবু ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হতে পারেন বলে অনুমান। কিন্তু মানসবাবু রাজি নন বলেই দলীয় সূত্রে খবর। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, মানসবাবু সবং ছেড়ে যেতে চান না। তাহলে ১৯৮৪ সালেই চলে যেতেন। ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর দেশ জুড়ে যখন কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে, তখনই প্রণব মুখোপাধ্যায় মানসবাবুকে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন। তিনি রাজি হননি। তারপর থেকেই সবংয়ের ভূমিপুত্র সবংয়েই দাঁত কামড়ে পড়ে রয়েছেন। সিপিএমের ভরা জোয়ারেও তাঁকে কেউ টলাতে পারেনি। হার হয়েছিল শুধু ২০০১ সালে।
যা পরিস্থিতি মানসবাবুর প্রার্থী না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। তবু প্রার্থী ঘোষণার আগে সবংয়ে হাজির তিনি। রবিবার চাঁদকুড়ি হাইস্কুলে আদিবাসী সম্মেলনে মানসবাবু বলেন, “আগে থেকেই আমাদের এই দলীয় কর্মসূচি ছিল। আর ঠিক সময়েই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে যাবে।”
কংগ্রেস প্রার্থী যেই হোন, মানসবাবুর গড়রক্ষা হবে তো? এই প্রশ্নই ঘুরছে সবং জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy