রাজ্যে শেষ দফা নির্বাচনের আগে শেষ প্রচার জমে উঠল ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে। শনিবার সকাল থেকেই কোথাও মিছিল, কোথাও বা পথসভায় দেখা গেল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। এই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া নিজের খাসতালুক সবংয়েই ছিলেন সারাদিন। তিনি মোট পাঁচটি পথসভা করেন। প্রতিটিতেই তিনি সরব ছিলেন তৃণমূলের সমালোচনায়। আর শনিবার বিকেলে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের সমর্থনে প্রচারে এসে সিপিএমকে আক্রমণের পাশাপাশি মানস ভুঁইয়াকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী বেচারাম মান্না।
শনিবার সবংয়ের বিষ্ণুপুর থেকে পথসভা শুরু করেন মানসবাবু। এরপর অর্জুনতলা, সবং, তেমাথানি-সহ মোট পাঁচটি সভা করেন তিনি। তাঁর পরিবার ও ছেলের বিদেশযাত্রা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষকে পাল্টা বিঁধে মানসবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর পড়াশোনা কম জানতাম। কিন্তু এতটা কম জানতাম না। কোনও কোনও ডাক্তারের আমেরিকায় যেতে টাকা লাগে না, মগজ লাগে।” একাধিক কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী এবং প্রচারেও তারকাদের উপস্থিতি সম্পর্কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মানসবাবু। তাঁর মতে, জনপ্রিয়তায় ভাটার জেরেই তারকাদের আসরে নামাতে বাধ্য হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
শেষ প্রচারে সারদা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ প্রসঙ্গ টেনে মানসবাবু আরও বলেন, “আমরা অপেক্ষায় রয়েছি ঝুড়ি থেকে কটা বেড়াল বেরোয়।” খড়্গপুরে গিয়ে মানসবাবু ঘাটাল কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক টি গুঁইতে ও সাধারণ পরিদর্শক অমৃত ত্রিপাঠির সঙ্গেও দেখা করেন। পরে তিনি বলেন, “মেটিয়াবুরুজ থেকে প্রায় ৪০ জন দুষ্কৃতী ঢুকেছে পিংলায়। তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে বের করে দিতে হবে বলে আমি পরিদর্শকদের কাছে দাবি করেছি।”
শনিবার সবংয়েই প্রচারে এসেছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের সমর্থনে পথসভা করেন তিনি। মোহাড় বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি পথসভায় বাম আমলে অনুন্নয়ন অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, সিপিএম ঘনিষ্ঠদেরই আগে চাকরি হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূলের আমলে সর্বত্র উন্নয়ন হচ্ছে বলে দাবি বেচারামের। তাঁর কথায়, “সিপিএম এই উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে না। ৩৪ বছর অনুন্নয়ন করে ওঁদের চোখে ন্যাবা হয়ে গিয়েছে।” সিপিএম নেতা গৌতম দেবকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি কৃষিমন্ত্রী। আর সবংয়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে মানসবাবুর প্রতি বেচারামের কটাক্ষ, “এখানে যে কংগ্রেস প্রার্থী রয়েছে আপনাদের মনে আছে তাঁকে বর্ধমানের মঙ্গলকোটে সিপিএম ধুতি তুলে দৌড় করিয়েছিল।”
শনিবার প্রচারের শেষ দিনে ডেবরার বসন্তপুরে আসার কথা ছিল গায়ক বাবুল সুপ্রিয়ের। ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী মহম্মদ আলমের সমর্থনে প্রচার করার কথা ছিল আসানসোলের গায়ক প্রার্থীর। সেই মতো হেলিপ্যাড ঘিরে ভিড় জমেছিল ভালই। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হেলিকপ্টার আকাশে চক্করও কাটে। কিন্তু নামেনি। স্বভাবতই হতাশ বিজেপির যুব কর্মীরা।
বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি নিজে রাত পর্যন্ত জেলাশাসকের কাছ থেকে অনুমতি জোগাড় করেছিলাম। কিন্তু স্বল্প সময়ে হেলিপ্যাড তৈরি করা যায়নি। বাবুল সুপ্রিয়ের নামতে না পারাটা আমাদের ব্যর্থতা, আমরাও হতাশ। আমি ওই কর্মীদের বোঝাবো।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy