পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ব্লকের শিলাবতী নদীর উপরে সেতু ভেসে গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে টানা বৃষ্টির দাপটে একাধিক জেলার বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোথাও ডুবে গিয়েছে বাড়ি, ঘর, রাস্তা, ভেঙে পড়েছে কাঁচা বাড়ির দেওয়াল। কোথাও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে সেতু।
বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের রায়নার ওলিবাজারে প্রবল বর্ষণের ফলে জলের তোড়ে ভেসে যায় কাঠের সেতু। খণ্ডঘোষের একলক্ষ্মীতে দ্বারকেশ্বর নদীর সেতুর কাছেই দেবখালের উপর এই কাঠের সেতুটি ছিল। ওই সেতু দিয়ে গাড়ি ও মানুষ সবই পারাপার করে। বর্ধমান ও হুগলির অনেকগুলি গ্রামের মানুষের ভরসা এই সেতুটি। দ্বারকেশ্বর নদে জল প্রায় ষাট ফুট বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই প্রবল বর্ষণ আর জলের তোড়ে ভেসে যায় কাঠের সেতুটি।
দু’দিনের লাগাতার বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের গলসির একাংশ। বৃষ্টির পাশাপাশি ডিভিসির ছাড়া জলের তোড়ে গলসি ২ নম্বর ব্লকের চার-পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত। জলের তলায় হাজার হাজার একর সদ্য রোয়া আমন ধানের জমি। মাথায় হাত পড়েছে এলাকার অধিকাংশ কৃষকের। পাশাপাশি জলের তলায় গিয়েছে ইটারু, অমরপুর, নবগ্রাম-সহ রাঘবপুর, গোমটপুর, ছালালপুর, পরশুড়ো ডালিমগড়ের মাঠের হাজার হাজার একর কৃষিজমি। এই বিষয়ে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘রোয়া ধানের জমি জলে ডুবে গেছে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ খবর রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে প্রশাসন।’’
একই রকম ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর এক ও দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে শিলাবতী নদীর উপর চৈতন্যপুর ও ধর্মপোতার কাঠের সাঁকোগুলি প্রায় জলে ডুবে গিয়েছে। রাতভর বৃষ্টিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী নদীর জল। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে মানুষকে। এ দিকে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়তেই মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতিতে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিল জেলা প্রশাসন। এই জন্য একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন জেলাশাসক রশ্মী কোমল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কমিটি তৈরির পরেই নিকাশি খালের পরিদর্শন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘দুই শহরের নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’
অন্য দিকে, বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা। জল জমেছে শহরেও। মেদিনীপুর, খড়্গপুর শহরেও জল জমে গিয়েছে রাস্তায়। অবস্থা খারাপ হুগলিরও। বৃহস্পতিবার সেখানে প্রবল বৃষ্টিতে দেওয়াল ভেঙে পড়ে একাধিক মাটির বাড়ির দেওয়াল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy