আবগারি দফতরের অভিযান চলে। মাঝেমধ্যে গর্জে ওঠেন পড়শিরা। কোমর বেঁধে চোলাইয়ের ঠেকও ভেঙে দেয় প্রমীলা বাহিনী। পুলিশ প্রশাসনও হঠাত্ করে অতি সক্রিয় হয়ে দু’-চার জনকে ধরপাকড় করে। ‘সমাজ কলুষিত হচ্ছে’ বলে সরব হন রাজনীতির কারবারিরাও। ব্যাস, ওই পর্যন্তই। তারপর হইচই থিতিয়ে গেলে ফের শুরু হয় চোলাইয়ের চেনা কারবার। মুর্শিদাবাদ ও পড়শি জেলা, নদিয়ায় চোলাই-চিত্র কমবেশি এমনটাই।
গত শুক্রবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির দেবগ্রামে গণেশ মিস্ত্রি (৪৫), হারাধন দাস ( ৪৬) ও গয়ানাথ দাস (৪৪) নামে তিন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবার ও গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, ওই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে চোলাই মদ খেয়ে। গ্রামবাসীদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে শনিবার সকাল থেকেই বেপাত্তা স্থানীয় চোলাই কারবারি সনাতন দাস। এ দিন পুলিশ সনাতনের বাড়িতে গিয়ে চোলাই ও চোলাই তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে। সাগরদিঘির ওসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সনাতনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এর আগেও বেশ কয়েকবার চোলাইয়ের কারবারের জন্য তাকে ধরাও হয়েছিল। গোটা ঘটনাটিই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, এখন পুলিশ সনাতনকে খুঁজতে দৌড়ঝাঁপ করছে। এতদিন তো সব জেনেও তারা ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসেছিল। স্থানীয় একটি ক্লাবের কর্তা সন্তু প্রামাণিক বলছেন, “অন্তত ১৫ বছর ধরে দেবগ্রামের এই চোলাইয়ের ঠেক চলছে। সে কথা পুলিশ প্রশাসনেরও অজানা নয়। বহু বার আমরা ও গ্রামের মহিলারা গিয়ে সেই ঠেক ভেঙে দিয়েছি। পুলিশকেও বিষয়টি জানাতে গেলে উল্টে শুনতে হয়েছে, ‘তোমরা গিয়ে ভেঙে দাও, আমরা সঙ্গে আছি।’ বলুন তো, এটা কি পুলিশের কথা হল?”