প্রাচীন লালবাগ শহরকে পাল্লা দিতে না পারলেও বহরমপুরের সঙ্গে টক্কর দিতেই পারে ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ের শহর বেলডাঙা। এলাকার প্রবীণরা জানাচ্ছেন, বেলডাঙা জনপদ হিসাবে ৫০০ বছরের প্রাচীন। আর স্থানীয় লোকসংস্কৃতি গবেষকদের দাবি, বিভিন্ন সময় মাটি খনন করে এলাকায় যে সমস্ত নিদর্শন মিলেছে তার থেকে জানা যায় এই শহরের বয়স ৫০০ বছরেরও বেশি। রেলপথের দু’দিকে বিছানো ১৭ টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরী হয় এই শহর। প্রথমে সরকার মনোনীত ১৭ জন সদস্য নিয়ে তৈরি হয় বেলডাঙা পুরবোর্ড। তখন শহরের বেশিরভাগ রাস্তা ছিল কাঁচা। সেই রাস্তায় যানবাহন বলতে ছিল গরু অথবা মোষে টানা গাড়ি। হাতে গোনা কিছু মোটরগাড়ি চলত। রাস্তাও ছিল সঙ্কীর্ণ। সেই রাস্তা দিয়ে পাশাপাশি দুটো গাড়ি যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব ছিল।
পরে গ্রামপঞ্চায়েত থেকে বেলডাঙা পুরসভায় উন্নীত হল ঠিকই। কিন্তু সমস্যার সমাধান তেমন হয়নি। প্রধান রাস্তাগুলির দু’পাশে পথচারীদের হাঁটার জন্য কোনও জায়গা না থাকায় পদে পদে দুঘর্টনা বাড়তে থাকল। পরে পিচের রাস্তা হলেও বেশিরভাগ রাস্তার পরিসর বদলায়নি। বেলডাঙা কলেজ রোড, ছাপাখানা চত্ত্বর ও বর্তমানে বিদ্যাসাগরের মূর্তি থেকে জুগি বাড়ির পাশ দিয়ে নেতজি পার্ক মোড় যাওয়ার রাস্তা চওড়া হল। বড়ুয়া কলোনি, সরুলিয়া কলোনি, রেলবাজার ও কলেজ মাঠের কিছু রাস্তার পরিবর্তন হল। কিন্তু রবীন্দ্র মূর্তি থেকে বেলডাঙা সোনাপট্টি দিয়ে যে রাস্তা হরিমতি বালিকা বিদ্যালয় যাচ্ছে সেই রাস্তা সঙ্কীর্ণই থেকে গেল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরে জনসংখ্যার পাশাপাশি বাড়তে থাকল গাড়িঘোড়ার সংখ্যাও। কিন্তু সেই অনুপাতে রাস্তাঘাট বা যান নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা তৈরি হল না। আর তার ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
বেলডাঙা শ্রীশচন্দ্র বিদ্যাপীঠের বিজ্ঞানের শিক্ষক আব্দুল হালিম বিশ্বাস বলেন, “যানজট এই শহরের অন্যতম বড় সমস্যা। পরিকল্পনা ছাড়ায় পঞ্চায়েতের রাস্তাগুলিকে শহরের প্রধান রাস্তার স্বীকৃতি দেওয়া হল। ফলে গলির মতো রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করায় যানজট দিনের পর দিন বাড়তেই থাকল।”