একসময় ছিল ব্যস্ত রাস্তা, যাতায়াত করত বাস, ছোট গাড়ি থেকে পাথর বোঝাই ট্রাকসবই। মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের আন্দির মোড় থেকে বীরভূমের হাজীপুর হয়ে বহরমপুর পর্যন্ত সোজা চলে গিয়েছে এই রাস্তা। জাতীয় বা রাজ্য সড়ক না হলেও দুই জেলার সংযোগকারী এই পথটিকে ‘শর্ট কাট’ হিসেবে ব্যবহার করতেন পর্যটক এবং ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আন্দির মোড় থেকে মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী সনকপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার হাল এখন দুর্বিষহ, যান চলাচলের অযোগ্য। গত পাঁচ বছর ধরে এমনই অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাস্তাটি। হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। মার খাচ্ছে জেলার পরিবহন ব্যবসা। বহরমপুর যেতে হচ্ছে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরপথে।
রাস্তাটির মাঝখানে প্রায়ই চোখে পড়ে উঁচু নিচু ঢিবি। আসলে পিচের মোরাম উড়ে গিয়ে রাস্তার বেশিরভাগ অংশ জুড়েই খানাখন্দ। কোথাও কোথাও সেই খন্দ এমন চেহারা নিয়েছে যে দেখলে মনে হল ঢিবি। ফলে যান চলাচল একেবারেই বন্ধ। একটি সাইকেল পর্যন্ত চলতে পারে না। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বহু বার রাস্তা মেরামতির বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অধীনেই ২০০৩ সালে তৈরি হয়েছিল এই রাস্তা। তারপর থেকে মাত্র একবার মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু মাসখানেকের মধ্যেই ফের পিচের চাদর উড়ে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে জীর্ণ চেহারা। সেটা প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা। তারপর থেকে এমনই হাল।
বেহাল রাস্তার কারণে সমস্যায় পড়ছেন মূলত কল্যাণপুর১ ও ২ নম্বর ব্লকের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা আসরাফুল আলম বলেন, “রাস্তার জন্য এলাকার উন্নয়ন ঘটছে না। এখানকার ছাত্রছাত্রীরা পাঁচথুপির কলেজে পড়তে যেতে পারছে না।” সব থেকে বেশি অসুবিধা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে। বাস ধরতে হলে কুণ্ডল, বাজেকুণ্ডল, হাতিয়া, সনকপুর, ঝিকরহাটির মতো প্রায় ২০টি গ্রামের বাসিন্দাদের যেতে হয় দশ কিলোমিটার দূরে আন্দিতে। আর এক বাসিন্দা রাহুল দাস বলেন, “২০ কিলোমিটার দূরে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হলে গাড়ি ভাড়া পড়ে এক হাজার টাকা। শুধুমাত্র বেহাল রাস্তার কারণে এত বেশি ভাড়া চায় গাড়ি চালকরা। না হলে ওই গাড়ির ভাড়া হত ৬০০ টাকা।”