Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
শাসক-বিরোধী এক সুর

রাতারাতি বদলি ৫৬ শিক্ষক

সংগঠনগুলির অভিযোগ, বহরমপুরের শ্রীগুরু পাঠশালায় একজন শিক্ষক ছিলেন। সেখানে আরও এক জন শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। একই ঘটনা, গোরাবাজার প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে, সেখানে ছাত্রীসংখ্যার অনুপাতে দু’জন শিক্ষক বাড়তি রয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রাণময় ব্রহ্মচারী
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২৮
Share: Save:

মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্কুলের ৫৬ জন প্রাথমিক শিক্ষককে বদলি করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, এঁদের অনেককেই সুবিধা পাইয়ে দিয়ে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক এবং বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি একযোগে সরব হয়েছে।

সংগঠনগুলির অভিযোগ, বহরমপুরের শ্রীগুরু পাঠশালায় একজন শিক্ষক ছিলেন। সেখানে আরও এক জন শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। একই ঘটনা, গোরাবাজার প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে, সেখানে ছাত্রীসংখ্যার অনুপাতে দু’জন শিক্ষক বাড়তি রয়েছেন। তা সত্ত্বেও আরও একজন শিক্ষককে ওই স্কুলে বদলি করা হয়েছে। খাগড়া জিটিআই প্রাথমিক বিদ্যালয়েও অতিরিক্ত একজনকে বদলি করা হয়েছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের শিক্ষক নেতা তথা মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শুভজিৎ সিংহের অভিযোগ, ‘‘আমাদের সম্পুর্ণ অন্ধকারে রেখে বদলি করেছেন জেলা পরিদর্শক। শিক্ষকদের স্থায়ীভাবে বদলি করার এক্তিয়ার যদিও তাঁর নেই। সরকারের বদলি নীতি সঠিক ভাবে পালন করা উচিৎ।’’ অন্য দিকে, বিরোধী নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (এবিপিটিএ) জেলা সম্পাদক নব্যেন্দু সরকারের ক্ষোভ, ‘‘কোনও নিয়মকানুন না মেনে রাতের অন্ধকারে এক বিশেষ চক্র উদ্বৃত্ত-শিক্ষক থাকা বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকদের বদলি করেছে। এমনকি, এক বছর আগে যাঁরা কাজে যোগ দিয়েছেন, তাঁদেরও পছন্দের বিদ্যালয়ে বদলি করা হল।’’

বদলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের তির যাঁর দিকে, সেই জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক নীহারকান্তি ভট্টাচার্যের সংক্ষিপ্ত দাবি, ‘‘বদলি নিয়ে কোন বেনিয়ম হয়নি, নিয়ম মেনেই হয়েছে।’’

তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের অঙ্গুলি হেলনে দলের সমর্থক শিক্ষকদের কাছের বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েই থাকে। বেআইনি হলেও এটাই দস্তুর। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫৬ জন প্রাথমিক শিক্ষকের বদলি নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি যে ভাবে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা পরিদর্শকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, তা এক কথায় নজিরবিহীন, বলছেন জেলার শিক্ষকমহলের একাংশ। জেলাপ্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দাবি, ‘‘শিক্ষক নেতারা বদলির নিয়মকানুন জানেন না। এখন ৪০ নয়, ৩০ জন পড়ুয়া পিছু একজন শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম হয়েছে। শিশু শ্রেণির ছাত্রদের কথা ওঁরা বিবেচনা করেন না। বাড়তি ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর জন্য কি শিক্ষক প্রয়োজন নেই?’’ নীহারবাবু জানান, পর্ষদের নির্দেশমতো জেলার মোট ৩১৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’জন শিক্ষক রাখতেই হবে। যাতে কোনও স্কুল শিক্ষকের অভাবে অচল না হয়ে যায়। বদলির সময় এই নিয়মই মানা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কালিমালিপ্ত করতে অপপ্রচার হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampur Primary Teacher Transfer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE