Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
operation

দ্বিধাবিভক্ত কিশোরীর জরায়ু, বিরল অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেলেন কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা

গত বুধবার রাতে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১৩ বছরের এক কিশোরী। শনিবার ওই কিশোরীর অস্ত্রোপচার হয়। ওই কিশোরী শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

বিরল অস্ত্রোপচার কৃষ্ণনগর হাসপাতালে।

বিরল অস্ত্রোপচার কৃষ্ণনগর হাসপাতালে। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:৪৭
Share: Save:

দু’ভাগে ভাগ হয়েছিল নাবালিকার জরায়ু। তারই একটি অংশে রক্ত জমে ক্রমশ বেলুনের আকার ধারণ করেছিল। কিশোরীকে সেই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিলেন কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বিরল এই অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেলেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার রাতে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১৩ বছরের এক কিশোরী। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগে ওই নাবালিকার প্রথম ঋতুচক্র শুরু হয়। তখন থেকেই অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। শুরু হয় পেটে যন্ত্রণাও। কিশোরীর বাড়ির লোকজন কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। করা হয় নানা পরীক্ষাও। তাতে ধরা পড়ে, ওই নাবালিকার বাঁ দিকের কিডনি নেই। পাশাপাশি চিকিৎসকরা জানতে পারেন, কিশোরীর জরায়ু দ্বিধাবিভক্ত। ধরা পড়ে, জরায়ুর একটি অংশে রক্ত জমে বেলুনের মতো ফুলে গিয়েছে। সাধারণত এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তার ফলে ভবিষ্যতে মা হওয়ার সম্ভাবনা চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। নাবালিকার ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রবল ঝুঁকি নিয়ে অসাধ্য সাধন করেন কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা। ডাক্তারি পরিভাষায় এই বিশেষ অস্ত্রোপচারের নাম ‘স্ট্রেসম্যান মেট্রোপ্লাস্টি’। শনিবার ওই নাবালিকার অস্ত্রোপচার করা হয়। সেই মতো পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে ওই নাবালিকার অবস্থা স্থিতিশীল।

নাবালিকার অস্ত্রোপচার হয় হাসপাতালের চিকিৎসক ভবতোষ ভৌমিকের নেতৃত্বে। এ ছাড়াও ছিলেন ভি মীনাক্ষী, শৌভিক দাস, রাকা জোয়ারদার এবং অণুজিৎ দাস নামে আরও চার চিকিৎসক। ভবতোষের কথায়, ‘‘ওই কিশোরীর জরায়ু দ্বিধাবিভক্ত ছিল। একটি অংশ যোনিপথের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না। তা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়। পাশাপাশি জমে থাকা রক্তও বার করা হয়েছে।’’

মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে। এই কথা শুনে নাবালিকার বাবা বলছেন, ‘‘আমরা চাষবাস করি। আমরা জানতামই না সমস্যাটা এত জটিল। মেয়ে পেটব্যথার কথা বলত। ডাক্তারবাবু আমাদের খুব সাহায্য করেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে জেনে খুব ভাল লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

operation Uterus Krishnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE