Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
বালিয়াডাঙা শরিফ বিএড কলেজ

বিএডের অনুমোদন বাতিল

নদিয়ার বালিয়াডাঙা শরিফ বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। আর্থিক দুর্নীতির কারণে শুক্রবার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর। তবে ওই কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, পড়ুয়াদের ফর্ম ফিল আপ, পরীক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দুর্নীতির কারণে কোনও কলেজের অনুমোদন বাতিল করলেও সেই কলেজের পড়ুয়াদের দায় বর্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেই। ফলে এতে পড়ুয়াদের চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৫ ০০:১৬
Share: Save:

নদিয়ার বালিয়াডাঙা শরিফ বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। আর্থিক দুর্নীতির কারণে শুক্রবার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর। তবে ওই কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, পড়ুয়াদের ফর্ম ফিল আপ, পরীক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দুর্নীতির কারণে কোনও কলেজের অনুমোদন বাতিল করলেও সেই কলেজের পড়ুয়াদের দায় বর্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেই। ফলে এতে পড়ুয়াদের চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’

মাসখানেক আগে শরিফ বিএড কলেজের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন ওই কলেজেরই পড়ুয়ারা। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ পুলিশ ও শিক্ষা দফতরকে লিখিত অভিযোগ জানান। তারপরেই নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয়। গঠন করা হয় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পদক্ষেপ। গত বছর টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল নদিয়ার চাপড়া ভক্তবালা বিএড কলেজের বিরুদ্ধে। এ বছর মে মাসের মাঝামাঝি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পড়ুয়াদের কাছে বাড়তি টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত শান্তিপুরের বালিয়াডাঙা শরিফ বিএড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পড়ুয়ারা অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতর নির্ধারিত ৫০ হাজার টাকা তাঁরা জমা দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও দফায় দফায় তাঁদের কাছ থেকে নানা খাতে আরও প্রায় ৪৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ফর্ম ফিল আপের অজুহাতে আরও ২১ হাজার ৫০০ টাকা চেয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, এখন বিএড পরীক্ষা হয় ১৪০০ নম্বরের (থিওরি ৭০০ ও প্র্যাকটিকাল ৭০০)। এর মধ্যে ১২০ নম্বর থাকে সংশ্লিষ্ট কলেজের নিয়ন্ত্রণে। আর ৫৮০ নম্বরের পরীক্ষা হয় এক্সটার্নাল কোনও শিক্ষকের উপস্থিতিতে। ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মোট ৭০০ নম্বর কলেজেরই হাতে থাকে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, শরিফ বিএড কলেজ কর্তৃপক্ষ কথায় কথায় ওই ৭০০ নম্বরের প্রসঙ্গ তুলতেন। বলতেন, তাঁদের কথামতো অতিরিক্ত টাকা না দেওয়া হলে পরীক্ষায় নম্বর কমে যাবে। পড়ুয়াদের একাংশ দাবি করেছিলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার প্রমাণও (অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং) তাঁদের কাছে আছে।

বিষয়টি জানাতে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু। পরে তদন্তও শুরু করে চার সদস্যের ওই কমিটি। সম্প্রতি ছাত্রছাত্রীদের মারধর ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগে বালিয়াডাঙা শরিফ বিএড কলেজের মালিক তথা পরিচালন সমিতির সম্পাদক শরিফউদ্দিন মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতারও করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। কলেজের অনুমোদন বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে ওই কলেজের পড়ুয়াদের প্রতিক্রিয়া, এমন দুর্নীতিগ্রস্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনটাই হওয়ায় উচিত। তবে তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারলেই খুশি।

শরিফউদ্দিনকে এ দিন ফোন ও এসএমএস করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি। বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে ওই কলেজের পড়ুয়াদের প্রতিক্রিয়া, এমন দুর্নীতিগ্রস্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনটাই হওয়ায় উচিত। তবে তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারলেই খুশি।

শরিফউদ্দিনকে এ দিন ফোন ও এসএমএস করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE