চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সেই নীল বর্ণের দুর্গা। নিজস্ব চিত্র।
দেশ বদলে গিয়েছে। কিন্তু ভুলের বদল হয়নি। এক সময় মৃৎশিল্পীদের ভুলে রং বদলে গিয়েছিল দুর্গা প্রতিমার। সেই ঐতিহ্যই নিয়ে চলেছে কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবার। ২৮৯ বছরের পুজোয় আজও প্রতিমা হয় নীল বর্ণের। প্রতিমার গায়ের রঙের জন্য ওই পুজো এখন ‘নীল দুর্গাবাড়ি’র পুজো নামেই পরিচিত।
কৃষ্ণনগরের নাজিরাপাড়া নীল দুর্গাবাড়িতে দুর্গা পূজিত হন অপরিজিতা রূপে। এখানে দুর্গা প্রতিমার গায়ের রং নীল বর্ণের। নেপথ্যে রয়েছে ভিন্ন এক কাহিনি। সে কথাই জানালেন ওই পরিবারের সদস্য চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘‘অধুনা বাংলাদেশের বরিশালে ২৮৯ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়। সেখানকার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী দুর্গা প্রতিমার পাশে লক্ষ্মীর সঙ্গে কার্তিক এবং সরস্বতীর সঙ্গে গণেশ থাকে। যা অন্য কোনও দুর্গা প্রতিমার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় না। বেশ কয়েক প্রজন্ম আগে এই দুর্গা প্রতিমা অতসী রূপে পূজিত হতেন। তবে কোনও এক সময়ে দুর্গা মূর্তি তৈরির সময়ে মৃৎশিল্পীরা ভুলবশত প্রতিমার গায়ের রং নীল করে ফেলেন। এর পর দুর্গাপূজার দায়িত্বে থাকা চট্টোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য অপরিচিতা রূপের সেই প্রতিমাই পুজো করার স্বপ্নাদেশ পান। এর পর থেকে আজও নীল বর্ণের দুর্গা প্রতিমা হয়।’’
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশ থেকে তাঁরা এ দেশে চলে আসেন। ভূগোল বদল হলেও রীতিতে ছেদ পড়েনি। ১৯৪৮ সাল থেকে এ দেশেও শুরু হয় পুজো। পুজোর সময় মহিষ এবং পাঁঠা বলির প্রচলন ছিল বলেও জানিয়েছেন চঞ্চল। তবে ২০০৬ সাল থেকে সেই পুজো বন্ধ হয়ে যায়। নীল বর্ণের অনন্য প্রতিমার টানে দূরদূরান্ত থেকে আজও ভক্তেরা ছুটে আসেন কৃষ্ণনগরের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের নাটমন্দিরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy