দু’টি দুর্ঘটনায় বাবা ও ছেলে- সহ তিন জন মারা গিয়েছেন। বুধবার সকালে বহরমপুরের ওই দু’টি ঘটনাতেই গাড়ির চালক ও খালাসি পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় বিমাকর্মী মানব দত্তের (৪২) বাড়ি খড়গ্রামের ইন্দ্রাণী গ্রামে। তাঁর একমাত্র সন্তান সাড়ে ন’বছরের অর্ঘ্য কিছু দিন থেকে জ্বরে ভুগছিল। বহরমপুরে ছেলের চিকিৎসা করাবেন বলে অর্ঘ্যকে স্কুটিতে চাপিয়ে মানব এ দিন ভোরে বাড়ি থেকে বহরমপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বহরমপুরে ঢোকার মুখে উত্তরপাড়ার কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি লরি তাঁদের চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই বাবা ও ছেলে মারা যায়। বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘লরি না বাস, কী তাঁদের চাপা দিয়েছে সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই।’’ স্বামী ও একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পূর্ণিমা দত্ত। তিনি কোনও মতে বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরে ছেলে জ্বরে ভুগছিল। খুব ভোরে স্কুটিতে বেরিয়ে যায় দু’জন। ডাক্তার দেখিয়ে স্কুলের অনুষ্ঠান শেষে তাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বাবা-ছেলেরই কেউই আর ফিরল না!’’
সাড়ে ৯ বছরের অর্ঘ্য খড়গ্রামের পাশের থানা বড়ঞার কুলি-কাটনা এলাকার বেসরকারি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বুধবার ছিল ওই স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান। চিকিৎসককে দেখানোর পরে ওই অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন তাঁর বাবা মানব। সেই কারণে বাড়ি থেকে অর্ঘ্য স্কুলের পোশাক পরেই বাবার সঙ্গে বের হয়েছিল। এ দিন ভোরে বাবা-ছেলের মর্মান্তিক ঘটনার শোনার পরে স্থগিত হয়ে যায় স্কুলের অনুষ্ঠান।
এ দিনই সকাল ৮টা নাগাদ অন্য একটি দুর্ঘটনায় বহরমপুর লাগোয়া বানজেটিয়া-গ্রিনফার্ম মোড়ের কাছে বহরমপুর-চুনাখালি রাজ্য সড়কের উপর যাত্রীবাহী একটি ট্রেকারের খালাসিকে পিষে দেয় বালি বোঝাই একটি লরি। ঘটনাস্থলেই মারা যান আলতাফ শেখ (৪৮) নামে ওই খালাসি। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার শিলপুকুর গ্রামে।