স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন কমিটির ব্যবস্থাপনায় ওঁরা হাজির হলেন মায়াপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
সত্তর ছুঁইছুঁই এক বৃদ্ধাকে দেখে কোথায় চললেন জানতে চেয়েছিলেন প্রতিবেশী। তার উত্তরে একগাল হেসে বৃদ্ধার জবাব— “বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছে গো, বেড়াতে! প্রথম বার!”
গোটা জীবন ব্যস্ত থেকেছেন সংসারের কল পেষাইয়ে। সন্তানদের বড় করা থেকে দৈনন্দিন যাপনের খরচ মিটাতে গিয়ে আর কখনও বেড়াতে যাওয়ার বিলাসিতা সম্ভব হয়নি। তাই ওঁদের কেউ কখনও বাড়ির বাইরে পা রাখেননি। কখনও ঘুরতে যাননি ওঁরা। বয়স কালের নিয়মে বেড়েই গিয়েছে। কিন্তু শখ থেকে গিয়েছে অপূর্ণ।
এই বিরাশি জন বয়স্ক মানুষের ভ্রমণের আয়োজন করল স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন কমিটি। সম্পূর্ণ বিনা খরচে তাঁদেরকে মায়াপুর ঘুরিতে আনা হল। এঁরা সকলেই দুঃস্থ পরিবারের, বয়স ৬৬ থেকে ৮২-র মধ্যে। রানাঘাট মহকুমাশাসকের বাংলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছিল দু’টি বাস। গুটিগুটি পায়ে বাসে উঠে এলেন ওঁরা। প্রায় সকলেই প্রথম বারের জন্য ঘুরতে যাচ্ছেন। বিভিন্ন মন্দির ঘুরে, দুপুরে মায়াপুর মন্দিরে প্রসাদ খেয়ে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বাস ফিরে আসে রানাঘাটে। কমিটির সভাপতি কোশলদেব বন্দোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিদিন সকালে কয়েক জন বয়স্ক মানুষ শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ‘ওয়াকিং জোন’ দিয়ে কীর্তন করতে করতে যান। তাঁরাই এক দিন আবদার করেন বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার। তাই ওঁদের মায়াপুরে নিয়ে যাওয়া। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে সঙ্গে তিন জন স্বাস্থ্যকর্মীকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”
ফিরে এসে আনন্দে কেঁদেই ফেলেন ৮২ বছরের রূপলাল রায়। তাঁর বয়ান, “আমি ঘুরে ফিরলাম। ভাবতেও পারছি না!” একই অনুভূতির কথা শুনিয়েছেন মীরা বিশ্বাস, বাসন্তী বিশ্বাসেরা। শেষ অবধি ভ্রমণের শখ পূরণ হওয়ায় সকলেই খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy