Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঝিমিয়েছে নদী, গ্রাম তবু জলের ঘেরাটোপে

জলবন্দি রাস্তা। ভরতপুর ১ ব্লকের গাড্ডা এলাকায়। ছবি: গৌতম প্রমাণিক।

জলবন্দি রাস্তা। ভরতপুর ১ ব্লকের গাড্ডা এলাকায়। ছবি: গৌতম প্রমাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

বৃষ্টি ধরেছে, জলস্ফীতির হারও কম, কিন্তু পাঁকাল জমিতে আবাদের মতোই অনিশ্চিৎ হয়ে উঠেছে চলাফেরা। নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের অধিকাংশ জনপদ এখনও তাই অগম্য।

বৃহস্পতিবার দিনভর যে আতঙ্ক ছেয়েছিল মায়াপুরে, শুক্রবার সকাল থেকে তা একটু বুঝি কমেছে। ক’দিন ধরে ভাগীরথীর পাড়ে দাঁড়িয়ে জল মাপছিলেন মায়াপুরের হোটেল ব্যবসায়ীরা। সামনেই ঝুলন উৎসব।বৃষ্টিতে গঙ্গা ক্রমশ এগিয়ে আসছে। সেই নদীই এ দিন যেন অনেক শান্ত। রাস্তার পাশে বানভাসি জমির দিকে তাকিয়ে মায়াপুর হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রদীপ দেবনাথ বলছেন, “আর একটু জল বাড়লেই ভেসে যেত মায়াপুর। তবে, আজ থেকে জল কমছে। উৎসবের বাজারটা অবশ্য চাঙ্গা হতে ক’দিন সময় লাগবে।’’

সেচ দফতর থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শুক্রবার বিকেল থেক ভাগীরথীর জলস্তর আর বাড়ছে না। এ দিন বেলা বারোটার সময় স্বরূপগঞ্জে ভাগীরথীর জলস্তর ছিল ৮.৫৮ মিটার। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্য়েই তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮.৫৯ মিটার। সেচ দফতরের কর্তারা বলছেন, “মনে হচ্ছে এ যাত্রায় বুঝি বেঁচে গেলাম!”

শুক্রবার সকাল থেকে চড়া রোদ উঠতে শুরু করেছে। তবে, তার ফলে, বহু জায়গায় জন কমলেও চলাচল অসাধ্য হয়ে উঠেছে। নবদ্বীপের নিচু এলাকায় জল দাঁড়িয়ে থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কপালের ভাঁজ কমেছে খানিক। তবে, পুজোর মুখে, তাঁতের ব্যবূসা মার খেতে চলেছে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার ছিল নবদ্বীপের তাঁত কাপড়ের হাট। নবদ্বীপ শহর শুকনো হলেও যে সব জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এই হাটে কাপড় কিনতে আসেন বিশেষ করে বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুরের ব্যবসায়ীরা আসতে পারেনি। হাট বিশেষ জমেনি।

কিছুটা হলেও যেন স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদও। কান্দি এলাকায় জল কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার কান্দি মহকুমারা বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুর ও ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকের গড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জল কমেছে। টানা এক সপ্তাহ ধরে জলবন্দি হয়ে পড়ে আছে ওই দু’ব্লকের প্রায় দেড় হাজার পরিবার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও প্রায় দুদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন সেচ দফতরের কর্তারা।

তবে জল কমলেও এখনও সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জাওহাড়ি ও ভড়ঞা গ্রামের রাস্তা থেকে জল না সরে যাওয়ায় নৌকাতেই যাতায়ত করতে হচ্ছে ওই দু’গ্রামের বাসিন্দাদের। একই ভাবে গড্ডা এলাকার সুকধানপুর গ্রামের বাসিন্দারা এখনও প্রাইমারি স্কুল ও স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আশ্রয়েই আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে খাবার ও পানীয় জল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কুঁয়ে নদীর জলও কমতে শুরু করেছে। গড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ কামরেজামান বলেন, “বৃহস্পতিবার কাশীপুর, বালিচুনা গ্রামে যাওয়ার রাস্তা জলে ঢুবে যাওয়ায় চিন্তা হচ্ছিল, তবে, রাত থেকেই জল কমতে শুরু করায় আপাতত বিপদ মুক্ত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Waterlogged Rainfall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE