Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চাঁদার ছুতোয় ঢুকে লুটপাট

চাঁদা তোলার অজুহাতে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধার গলায় ছুরি ধরে লুটপাট চালাল এক দুষ্কৃতী। শুক্রবার সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিগন্ত পল্লির এই ঘটনা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়ায় রেণু সরকার হত্যা মামলার কথা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২২
Share: Save:

চাঁদা তোলার অজুহাতে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধার গলায় ছুরি ধরে লুটপাট চালাল এক দুষ্কৃতী। শুক্রবার সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনের দিগন্ত পল্লির এই ঘটনা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়ায় রেণু সরকার হত্যা মামলার কথা।

২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে শান্তিনিকেতনের বাগানপাড়ায় বাড়ির দোতলার ঘরে খুন হন কলকাতার মহাদেবী বিড়লা গালর্স স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেণু সরকার (৭৮)। রড দিয়ে ওই বৃদ্ধার নাকে আঘাত করা হয়েছিল। ওই খুনের ঘটনায় নিহতের বাড়ির কেয়ার টেকার উজ্জ্বল তপাদার, এলাকার দাগি দুষ্কৃতী মঙ্গল সাহানি ও তার শাগরেদ পিন্টু দাস গ্রেফতার হয়। অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনার পুনর্গঠনের সময়ে মঙ্গলই জানায় খুনে ব্যবহৃত রডটি পড়ে আছে রেণুদেবীর বাড়ি লাগোয়া পরিত্যক্ত জমিতে। পুলিশ তা উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি ছিল, জেরার মুখে রেণুদেবীকে রড দিয়ে খুন করার কথা কবুল করেছে মঙ্গল। অন্য দু’জন খুনের ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ জড়িত বলেও পুলিশের দাবি।

সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীনই বর্ধমান জেল থেকে কারারক্ষীদের চোখে ধুলো দিয়ে পালায় মঙ্গল। তার আগে সিউড়ি সদর হাসপাতাল থেকেও পালানোর চেষ্টা করেছিল সে। ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে সিআইডি-র হাতে ধরা পড়ে মঙ্গল।

এ বারের ঘটনাতেও পার পায়নি দুষ্কৃতী। শুক্রবার রাতে ভুবনডাঙার বাসিন্দা কর্ণ মন্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া দুটি সোনার বালা, সাত হাজার টাকা এবং মোবাইল ফোন। জেরার পর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, শুধুমাত্র চুরি করার জন্যই হৈমন্তীদেবীর বাড়িতে ঢুকেছিল কর্ণ। ছুরির ব্যবহার করেছিল নিতান্তই ভয় দেখানোর জন্য। কলকাতার বাসিন্দা ৭৯ বছরের বয়সী প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা হৈমন্তী দত্তগুপ্তের পৈতৃক বাড়ি শান্তিনিকেতনেই। কখনও একা, কখনও বোনকে নিয়ে থাকতেন। এ বারে একাই এসেছিলেন। ঘটনাচক্রে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে ঠাকুর বাড়ির সঙ্গে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র সুরেন্দ্রনাথের কন্যা জয়শ্রী সেনের মেয়ে হন এই হৈমন্তীদেবী।

শান্তিনিকেতনে যে সব পল্লিগুলি রয়েছে, সেগুলির সিংহভাগ বাড়িতেই স্থায়ী ভাবে কেউ বাস করেন না। তাঁরা মাসে কয়েক বার কিংবা পৌষমেলা, বসন্ত উৎসব, দুর্গাপুজোর সময়ে চলে আসেন শান্তিনিকেতনে। শুক্রবারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাঁরা যেহেতু সবসময় থাকেন না, তাই এলাকাগুলির উপর নজর দেয় না পুলিশ কিংবা প্রশাসন। এক বার রাস্তার আলো খারাপ হলে দীর্ঘদিন সেই এলাকা অন্ধকার হয়েই থেকে যায়। ফলে বেশি করে সুযোগ পাচ্ছে দুষ্কৃতীরা বলেই তাঁদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loot Miscreants Contribution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE