Advertisement
E-Paper

লাইসেন্স ছাড়া বাইক নয়, দুর্ঘটনা রুখতে নয়া দাওয়াই

এ বার দুর্ঘটনা রুখতে ও নাবালকদের হাতে মোটরবাইক যাতে না যায় সে জন্য লাইসেন্স ছাড়া মোটরবাইক বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, নাবালক কিংবা লাইসেন্সবিহীন লোকজনের হাতে চলে যাচ্ছে মোটরবাইক, দু’চাকার যান। আর তারাই বেশি দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে।

সুজাউদ্দিন ও সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৩:০২
ছুটছে বাইক, থামায় কে!  বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

ছুটছে বাইক, থামায় কে!  বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

আওয়াজটা শোনা যাচ্ছিল বহু দূর থেকেই। বহরমপুরের গঙ্গাপাড় ধরে হরিদাসমাটি যাওয়ার রাস্তায় তখন থিকথিকে ভিড়। সেই ভিড় থেকেই শোনা গেল, ‘‘ওই, সূয্যি পাটে যেতেই শুরু হল! হয় নিজেরা মরবে নইলে কাউকে মারবে।’’

তাঁদের কথা শেষ না হতেই বিকট আওয়াজ করে সাঁ করে বেরিয়ে গেল তিনটে মোটরবাইক। তাদের কারও মাথায় হেলমেট নেই। চালকদের বয়স মেরেকেটে চোদ্দো থেকে পনেরো। তাদের কোনও ভাবেই লাইসেন্স পাওয়ার কথাও নয়। অথচ বিপুল দামের সেই বাইকের রাশ থাকে তাদের হাতেই। ঘটে দুর্ঘটনাও। বহরমপুর থেকে বলরামপুর কিংবা জঙ্গিপুর থেকে জলঙ্গি, ছবিটা সর্বত্রই কমবেশি একই রকম।

এ বার দুর্ঘটনা রুখতে ও নাবালকদের হাতে মোটরবাইক যাতে না যায় সে জন্য লাইসেন্স ছাড়া মোটরবাইক বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, নাবালক কিংবা লাইসেন্সবিহীন লোকজনের হাতে চলে যাচ্ছে মোটরবাইক, দু’চাকার যান। আর তারাই বেশি দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। গত তিন বছরের দুর্ঘটনার তথ্য যাচাই করে এমনই তথ্য হাতে এসেছে পরিবহণ দফতরের কাছে। আর সেই কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা। ইতিমধ্যে সেই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে মোটরবাইক ডিলারদের কাছে।

ডোমকলের আব্দুর রশিদ, বহরমপুরে তারক মল্লিকেরাও কবুল করছেন, বহু নাবালক-নাবালিকাদের হাতে চলে যাচ্ছে ‘হাই পিক আপ’ বাইক। তাদের না আছে লাইসেন্স, না থাকছে মাথায় হেলমেট। ফলে দুর্ঘটনা রুখতে এটা ভাল পদক্ষেপ। তবে এই নয়া নির্দেশে মোটরবাইক বিক্রি যে কমেছে তা-ও জানাচ্ছেন মোটরবাইক ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নির্দেশ জানার পরে ক্রেতার সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছে।

বহরমপুরের এক ডিলার তপন চৌধুরী বলছেন, ‘‘এ ভাবে লাইসেন্স ছাড়া বাইক বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ায় গত দু’দিন থেকে বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে। ফলে আমরা সমস্যায় পড়েছি।” বহরমপুরের আর এক ডিলার হিমাদ্রী দাসের কথায়, ‘‘বহরমপুরের পাশাপাশি রঘুনাথগঞ্জেও শোরুম আছে। কয়েক দিন আগে জঙ্গিপুরের এআরটিওর নির্দেশিকা পেয়েছি। যার জেরে বিক্রি একেবারে কমে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, ‘‘মোটরবাইক যা বিক্রি হয় তার ৮০ শতাংশ নতুন ক্রেতা। তাঁদের অনেকেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আমাদের মাধ্যমে বাইকের যেমন রেজিস্ট্রেশন হয়, তেমনি বাইক কেনার সময় লাইসেন্সও আমাদের মাধ্যমে করা গেলে আরও ভাল হত।’’

মুর্শিদাবাদের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অনন্ত সরকার জানাচ্ছেন, ডিলারদের কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না তা-ও দেখা হবে। লাইসেন্স না থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। জেলায় ১৬টি অনুমোদিত মোটর ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার আছে। সেখানে বাইক চালানো শিখে নিয়ে লাইসেন্স করিয়ে নিতে অসুবিধা কোথায়?

নির্দেশে বলা হয়েছে আঠারো বছরের উর্দ্ধে যাঁরা তাঁদের নাম, ঠিকানা, বয়স, এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কি না তা খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে। এই সব নথি ঠিক থাকলে আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের অনুমতি নিয়ে তবেই দু’চাকার যান বিক্রি করা যাবে। আর এতেই ফাঁপড়ে পড়েছেন বহু ক্রেতা-বিক্রেতা। ডোমকলের এক ডিলার বলছেন, “আগে বেশ কিছু বাইক বিক্রি করে সেগুলির রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকের লাইসেন্স নেই। কী হবে বুঝতে পারছি না।”

Bike Driving License Murshidabad Transport Department
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy