Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মহকুমা পরিষদে দু’টি আসন বাড়ল, লড়াই হবে চতুর্মুখী

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ত্রিস্তরীয় ক্ষেত্রেই আসন পুনর্বিন্যাসের সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্দেশিকা অনুসারে মহকুমা পরিষদের আসন সংখ্যা ৭টি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়ে হয়েছে ৯টি। একইভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩৩টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির ২টি আসন বেড়েছে। এই অবস্থায় আগামী মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে ত্রিস্তরেই নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। আসরে বিজেপিও।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ত্রিস্তরীয় ক্ষেত্রেই আসন পুনর্বিন্যাসের সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই নির্দেশিকা অনুসারে মহকুমা পরিষদের আসন সংখ্যা ৭টি থেকে বেড়ে দাঁড়িয়ে হয়েছে ৯টি। একইভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩৩টি এবং পঞ্চায়েত সমিতির ২টি আসন বেড়েছে। এই অবস্থায় আগামী মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে ত্রিস্তরেই নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। আসরে বিজেপিও। মোর্চা, আদিবাসী বিকাশ পরিষদ, কেপিপি-র মতো দলগুলি সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে বিজেপি। মাটিগাড়ার একটি হোটেলে বিজেপি ও তার শরিকদের বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শিলিগুড়ির পঞ্চায়েত নির্বাচন চর্তুমুখী হবে বলেই ধরা হচ্ছে।

বর্তমানে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হতেই গত ১৫ জুন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পরিষদ স্তরে প্রশাসক বসানো হয়েছে। নির্বাচন সম্পূর্ণ করে বোর্ড গঠন অবধি প্রশাসক থাকার সরকারি নিয়ম রয়েছে। এই প্রসঙ্গে দার্জিলিঙের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক পুনীত যাদব বলেন, “আসন সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রশাসকেরা কাজ করছেন। নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকার যখন ঠিক করবে, তখনই নির্বাচন করানো হবে। আমরা প্রস্তুত রয়েছি।”

পঞ্চায়েত স্তরের আসন এবং ক্ষমতা দখলের হিসাবে গত মাসের শেষ অবধি মহকুমা পরিষদ, চারটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ২২টির মধ্যে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে ছিল। ২০০৯ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর অবশ্য ছবিটা অন্যরকম ছিল। মহকুমা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত অধিকাংশই বামেদের দখলে ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। এই অবস্থায় পরিবর্তন শুরু হয় গত বছর। দলবদলের জেরে তৃণমূলের দখলে চলে যায় অনেক আসন। এ বার নির্বাচনে নিজেদের জায়গা ধরার লড়াই শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। পাল্টা নিজেদের ঘাঁটি উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেছে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টও। সব দলের তরফেই মিটিং, ঘরোয়া বৈঠক শুরু হয়ে গিয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, চারটি ব্লকে মহকুমা পরিষদের সাতটি আসন ছিল। এবারে পুনর্বিন্যাসের পরে খড়িবাড়ি ব্লকে ১টির বদলে ২টি আসন এবং ফাঁসিদেওয়া ব্লকে ২টির বদলে ৩টি আসন করা হয়েছে। মাটিগাড়া এবং নকশালবাড়ি ব্লকে অবশ্য ২টি করেই আসন রয়েছে। ২০১১ সালের জনগণনার নিরিখে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জেরে ভাগ করা হয়েছে আসনগুলিকে। গত ভোটে পরিষদের ৭টি আসনের মধ্যে ৪টি ছিল বামেদের এবং কংগ্রেসের দখলে ছিল ৩টি আসন। দলবদলের জেরে কংগ্রেসের সকলে এবং একজন বাম সদস্য তৃণমূল যোগ দিতেই গত বছরের অক্টোবরে পরিষদ তৃণমূলের দখলে যায়। এবারে ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ৩২৯টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬২টি এবং চারটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন বেড়ে ৬৪ থেকে হয়েছে ৬৬টি।

ফাঁসিদেওয়া বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। তেমনই খড়িবাড়ির বড় অংশ বামফ্রন্টের। পুনর্বিন্যাসে এবারে সেখানেই মহকুমা পরিষদের আসন বেড়েছে। তবে সেখানকার বর্তমানে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিই তৃণমূলে। দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকায় আমাদের শক্তি বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। মহকুমা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত অধিকাংশই শেষ অবধি আমাদের দখলে ছিল। এবার তা ধরে রেখে আরও আসন বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। মানুষ যে উন্নয়নের সঙ্গে আছেন, তা পরিষদের নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে যাবে।”

বামফ্রন্টের জেলার আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য অভিযোগ করেন, “তৃণমূল তো মানুষের ভোটে জেতেনি। ভয় ভীতির রাজনীতি করে ক্ষমতা দখল করে গিয়েছে।” তাঁর দাবি, গ্রামীণ এলাকার মানুষ বামেদের পাশেই থাকবেন। গত এক বছরে পরিষদ থেকে পঞ্চায়েতের অধিকাংশ ক্ষেত্রে দলের প্রতিনিধিরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার বলেন, “দলত্যাগ করে নেতারা গিয়েছেন। কর্মীরা দলে আছেন। বাসের কয়েকজন চালক নেমে গিয়েছেন মাত্র। যাত্রীরা বাসেই আছেন। ভোটে আমরা তা দেখিয়ে দেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri sub-division kaushik choudhury contest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE