বৃহস্পতিবার দেবীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক স্কুলের নবীন বরণ উত্সব’কে ঘিরে মেতে উঠল গোটা গ্রাম।
কেউ সঙ্গে মাংস এনেছেন, কেউ দিয়েছেন চাল। কেউ মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন, কেউ জোগাড় করে দিয়েছেন মাইকের খরচ। কোচবিহার জেলা শহর থেকে পনেরো কিলোমিটার দূরে বসেরহাট গ্রাম। সেখানেই বৃহস্পতিবার দেবীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবীনবরণ অনুষ্ঠান এক উত্সবের আকার নেয়। এদিন প্রাক-প্রাইমারি, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিদের বরণ করে নিলেন কর্তৃপক্ষ। আবার চতুর্থ শ্রেণি পাশ করে যারা স্কুল ছাড়লেন তাঁদেরও জানানো হল বিদায়ী সংবর্ধনা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দার বলেন, “খুব ভাল উদ্যোগ। এমন অনুষ্ঠান হলে ছাত্রছাত্রী থেকে অভিভাবক সবার মনে একটা উত্সাহ তৈরি হয়। অন্য স্কুলগুলিতেও যাতে এই আয়োজন করা যায় আমরা ভেবে দেখব।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার দে বলেন, “ছাত্রছাত্রীর মধ্যে পড়াশোনা, সংস্কৃতি নিয়ে একটা উত্সাহ তৈরি করতেই তাঁরা উদ্যোগ। গ্রামের বাসিন্দারা, স্থানীয় ক্লাব, পঞ্চায়েত সদস্য সবাই সাহায্য করেছেন।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগেই স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়েছে। স্কুলে বাগান হয়েছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়েছে। বর্তমানে স্কুলে ১৫৭ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে রয়েছে ২৩ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৪০ জন। এ দিন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ওই এলাকায় প্রথমে শোভাযাত্রা হয়েছে। তার পরে স্কুল চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সব শেষে ছিল সকলে মিলে পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন স্থানীয়। পঞ্চায়েত সদস্য। মাইকের খরচ দিয়েছে স্থানীয় ক্লাব রেনেসাঁর সদস্যরা। মাংস, ভাত খাওয়ার আয়োজন করেন কয়েকজন বাসিন্দা এবং স্কুলের শিক্ষকরা। স্কুলে তাদের স্বাগত জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজনে খুশি পড়ুয়ারাও। দেবজিত্ দাস, প্রিয়া পারভিনের কথায়, “স্কুলে খুব মজা হল।” চতুর্থ শ্রেণি পাশ করে এই স্কুল ছেড়ে যাওয়া মোজাম্মেল হক কিংবা পূজা দেবনাথ, সাগরিকা পারভিনরা বলে, “এ দিনের অনুষ্ঠানের পরে স্কুল ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না।” তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী বাপি মিয়াঁ বলেছেন, “ছেলে তমজি ইসলাম তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের এমন ভালবাসা অন্য স্কুলে হয় কিনা জানি না। বাড়িতে কে স্নান করেনি, কে নখ কাটেনি সব দেখা হয়। অসুখ বিসুখেরও খবর নেন শিক্ষকরা। তাই এ দিন স্কুল কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করেছি।” একই কথা বলেছেন বিদ্যুত্ কর্মাধক্ষ্য ইসলাম মিয়াঁও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy