যাতায়াতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য আস্ত একটা বাতানুকূল কামরা ভাড়া করেছিলেন চিকিত্সকদের একটি সর্বভারতীয় সংগঠন। কিন্তু সেই চার্টার্ড কামরার উঠে দেখা যায়, বাতানুকূল যন্ত্র বিকল, কামরার ভিতর জল গড়াচ্ছে। বিক্ষোভে স্টেশনে একটি বাতানুকুল যন্ত্র মেরামত করে দিলেও, ট্রেন ছাড়ার পরেই শৌচাগারের জলও শেষ হয়ে যায়। রবিবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়া বাতানুকুল কামরায় এমনই ঘটে বলে অভিযোগ। চিকিত্সকদের সর্বভারতীয় একটি সংগঠনের তরফে কামরাটি ২ লক্ষাধিক টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল। পদাতিক এক্সপ্রেসের সঙ্গে জুড়ে ওই কামরায় শনিবার সকালে চিকিত্সকরা কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছন। এ দিন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসের সঙ্গে ওই রিজার্ভ কামরাটি জোড়ার কথা ছিল। চিকিত্সকদের অভিযোগ, এ দিন রাতে পদাতিকের সঙ্গে জোড়া কামরাটিতে উঠেই দেখা যায়, মেঝেতে জল থইথই। কামরার দুটি বাতানুকুল যন্ত্রই বিকল রয়েছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানালেও, কোনও পদক্ষেপ না করেই ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরে চেন টেন ট্রেনে থামিয়ে চিকিত্সকের ক্ষোভ জানান বলে জানা গিয়েছে। স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে বিক্ষোভও দেখান চিকিত্সকরা। লিখিত অভিযোগও করা হয়। তার পরে ট্রেনের এক বাতানুকূল যন্ত্র মেরামত করে, জল পরিষ্কার করে ট্রেন ছাড়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও কামরার আর একটি বাতানুকুল যন্ত্র খারাপ থাকায় যাত্রাপথে দুর্ভোগে পড়তে হয় চিকিত্সকদের। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধ ঘণ্টা পরে পদাতিক ছাড়লেও কিছু দূর যাওয়ার পরেই কামরার শৌচাগারের জল শেষ হয়ে যায় বলে অভিযোগ।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগে ডিআরএম অরুণ শর্মা বলেন, “অভিযোগ শুনেছি। কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি গাফিলতি থাকে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অ্যসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ান অব ইন্ডিয়ার রাজ্য শাখার তরফে একটি সেমিনারের জন্য ট্রেনের কামরাটি রিজার্ভ করা হয় বলে জানা গিয়েছে। সংগঠনের অভিযোগ, যে কামরাটি ভাড়া করে কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি আন, সেই কামরার পরিবর্তে রবিবার পদাতিকের সঙ্গে অন্য কামরা জুড়ে দেওয়া হয়। তার জেরেই বিপত্তি ঘটেছে। অভিযোগ, কামরায় থাকা জলের পাইপ চুঁইয়ে জল ভিতরে চলে আসে। বাতানুকূল যন্ত্র যেখানে বসানো রয়েছে, সেখানেও জল থইথই করায় যে কোনও মুহূর্তে শর্ট সার্কিটের আশঙ্কা ছিল। এক চিকিত্সকের কথায়, “একটি বাতানুকুল যন্ত্র খারাপ থাকায় কামরায় গরম ছিল। তাও মোটামোটি সামলে নেওয়া যেত। কিন্তু শৌচাগারে জল না থাকায় চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে।”
কামরাটি কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি আবার ফিরতি পথে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেনটি রাখা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আরও ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কলকাতা থেকে আসার পরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে কামরা পরিষ্কার করে, জল ভরার কথা থাকলেও, তার কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিন পদাতিকের সঙ্গে যে কামরাটি জোড়া হয়েছিল, তাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল রয়েছে কিনা দেখা হয়নি। চিকিত্সকদের সংগঠনের রাজ্য শাখার সম্পাদক মধুছন্দা কর বলেন, ‘‘আসার সময়ে যে কামরায় এসেছিলাম, সেই কামরাটি বদলে দেওয়া হয়। কামরায় বাতানুকূল যন্ত্র খারাপ, মেঝেতে জল থইথই আর শৌচাগারে জল নেই এর থেকে বেহাল দশা আর কী হতে পারে। আমরা তো রেলের সব শর্ত পূরণ করেছি, নির্ধারিত ভাড়াও দিয়েছি। তবু যে দুর্ভোগে পড়তে হল তা ভাবা যায় না। লিখিত অভিযোগ করেছি। কলকাতায় ফিরে ফের অভিযোগ করব।” ঘটনার কথা শুনেং জেলা বিজেপির সভাপতি রথীন বসু বলেন, “এমন ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়।” কেন এমন হল এবং এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তিনি রেল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy