এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির দাবিতে ফের জোরদার আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে রায়গঞ্জে। হাসপাতালের জন্য জোর করে জমি অধিগ্রহণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নারাজ হলেও এব্যাপারে অনড় রায়গঞ্জের মানুষ। রায়গঞ্জেই হাসপাতাল তৈরির দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস। আগামী একমাসের মধ্যে দাবি না মানা হলে জেলা জুড়ে অবরোধ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে এই সংগঠন। তারই প্রস্তুতিতে চলতি মাস থেকেই মিছিল ও পথসভার কর্মসূচি নিয়েছে তারা। এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে চেম্বার অব কর্মাসের তরফে জানানো হয়েছে, হাসপাতাল তৈরির দাবিতে জনমত তৈরি করতেই এই সিদ্ধান্ত। এ দিন চেম্বার অফ কমার্সের সাংবাদিক বৈঠকে হাসপাতাল তৈরির জন্য প্রস্তাবিত পানিশালা এলাকার কৃষকদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডুু বলেন, “প্রায় সাড়ে ৫ বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেও কাজ শুরু হয়নি এখনও। তাই বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের দাবি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে জমি অধিগ্রহণ সমস্যা মিটিয়ে রায়গঞ্জেই ওই হাসপাতাল তৈরি করা হোক।” সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ প্রদ্যুত সাহা ও কার্যনির্বাহী সদস্য দুর্গেশ ঘোষ বলেন, “ উত্তরবঙ্গের মানুষকে চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাই পর্যন্ত ছুটতে হয়। অথচ হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে চাষিরা স্বেচ্ছায় জমি দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।”
হাসপাতাল তৈরির জন্য প্রস্তাবিত পানিশালা এলাকার বাসিন্দা দুই চাষি ইকতেকার আলি ও রফিক আলি এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ইকতেকার আলি যুব তৃণমূল কংগ্রেসের শীতগ্রাম অঞ্চল কমিটির সভাপতি। রফিক আলি কংগ্রেস কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁরা বলেন, “এলাকার প্রায় ৯০ জন কৃষক হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি । এ নিয়ে কোনও রাজনীতি কেউ চায় না।”
২০০৯ সালে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছিল ৮২৩ কোটি টাকা। পানিশালায় জেলা প্রশাসনের চিহ্নিত করা ১০০ একর জমি ঘুরে দেখে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে যে কোনও আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে।” অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল সভাপতি ও রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জোর করে কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, শিলিগুড়ি, ইটাহার, বালুরঘাট, কালিয়াগঞ্জ- যেখানে খুশি এইমস হতে পারে, তবে কোথাও জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy