কলেজে নির্বাচন এগিয়ে আসতেই ছাত্র সংগঠনগুলির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচল কলেজ।
সোমবার দুপুরে পরিচয়পত্র বিলি করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে টিএমসিপি. সিপি ও এসএফআইয়ের কর্মী সমর্থকরা। পরীক্ষা চলাকালীন কলেজের বাইরে ওই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জখম হন ৩ জন। তাদের চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও প্রাথমিক চিকিত্সার পরে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরিচয়পত্র বিলিকে ঘিরে টিএমসিপির বহিরাগত কিছু যুবক তাণ্ডব চালিয়েছে বলে সিপি ও এসএফআই অভিযোগ তুলেছে। পক্ষান্তরে সিপি ও এসএফআইয়ের কর্মী সমর্থকরা জোট বেঁধে তাদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে টিএমসিপির অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়েই কলেজে পৌঁছয় বিরাট পুলিশ বাহিনি। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলার ঘটনায় টিএমসিপির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হচ্ছে বলে সিপি ও এসএফআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে। টিএমসিপির তরফেও ওই দুই ছাত্র সংগঠনের তরফে অভিযোগ জানানো হচ্ছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাহুল আমিন বলেন, “কলেজের ভিতরে কোনও ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।” চাঁচলের আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য বলেন, “এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
কলেজ ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২৯ জানুয়ারি কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন স্থির হয়েছে। তার আগে নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতেই সামান্য ছুতোয় ছাত্র সংগঠনগুলি ময়দানে নেমে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মূলত ক্ষমতা দখলকে ঘিরেই এ দিনের হামলার ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশও। গত বছর নির্বাচনের আগে থেকেই একাধিকবার সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কলেজ। ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ছাত্র সংঘর্ষে তুলকালাম কান্ড বেঁধেছিল কলেজে। ব্যালট বাক্স লুঠ করার অভিযোগ উঠেছিল টিএমসিপির বিরুদ্ধে। যার জেরে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। পরে আর কলেজে নির্বাচন হয়নি। এবার ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে শুরু করায় উদ্বিগ্ন কলেজ কতৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, সামনে কলেজে নির্বাচন। তাই অফিসঘর থেকে ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের থাকা নিয়ে বিবাদের জেরে বচসা বাঁধে। পরে বাইরে বের হওয়ার পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্র সংগঠনগুলি। ছাত্র পরিষদের চাঁচল কলেজ ইউনিটের সভাপতি জয়ন্ত দাসের অভিযোগ, “কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, যেখান থেকে পরিচয়পত্র বিলি করা হচ্ছে সেখানে ছাত্র সংগঠনের কেউ থাকবে না। কিন্তু টিএমসিপি সেখান থেকে বের হতে রাজি হয়নি। ওঁরা বের না হলে আমরাও যাব না বলায় আমাদের কর্মীদের মারধর করে ওরা বাইরে বের করে দেয়।”
টিএমসিপির বিরুদ্ধে এসএফআইয়ের চাঁচল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিতেশ পাণ্ডেরও অভিযোগ, “গতবার ব্যালট বাক্স লুঠ করে নির্বাচন ভেস্তে দিয়েছিল। এবারও যে পায়ের তলায় মাটি নেই তা বুঝতে পেরেই গা জোয়ারি শুরু করেছে।” টিএমসিপির চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি সুমিত সরকারের দাবি, “ওখানে প্রত্যেক সংগঠনের একজন করে ছিলেন। কিন্তু, সিপি ও এসএফআইআই জোট বেঁধে আমাদের কর্মীকে বাইরে করে দেয়। পরে তার প্রতিবাদ জানাতেই ওরা আমাদের উপর চড়াও হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy