উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজিতে ফেল করার পরেও জাল মার্কশিট নিয়ে কলেজে ভর্তির চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে আটক করল পুলিশ। তাঁদের ভর্তিও বাতিল হয়ে গিয়েছে। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর কলেজে ভর্তি হতে এসেছিলেন ইসলামপুর থানার বলেঞ্চার এলাকার বাসিন্দা ওই দুই ছাত্র। কলেজের কর্মীরা তাদের মার্কশিট দেখে সন্দেহ হওয়ায় দু’জনকে জেরা করে পুলিশকে খবর দেন। ইতিমধ্যে ওই ছাত্র দু’জন জেরার মুখে ভেঙে পড়েন। দু’জনেই লিখিত ভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জানান, একেকজন তিন হাজার টাকার বিনিময়ে ওই জাল মার্কশিট পেয়েছেন। ইসলামপুরের এসডেপিও সুবিমল পাল বলেন, “ওই দুই ছাত্র, গৌর রায় ও ভূপেশ রায়কে জেরা করা হয়েছে। মার্কশিট দু’টি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁরা শানু মহম্মদ নামে একজনের থেকে মার্কশিট পেয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁকেও দরকারে জেরা করা হবে। ঘটনার সত্যাসত্য যাচাই করা হচ্ছে।” কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌর ঘোষ বলেন, “বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। আমরা অধ্যক্ষকেও জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।”
এ দিন ইসলামপুর কলেজে পাশকোর্সের ভর্তি চলছিল। অনলাইনের মাধ্যমে ফর্ম জমা করার পর মেধা তালিকা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের আসল মার্কশিট-সহ নানা নথিপত্র জমা দিতে হয়। সে জন্য কলেজে মার্কশিট জমা করতে গিয়েছিল ওই দুই যুবক। মার্কশিট দেখার সময় কলেজের শিক্ষাকর্মীদের কয়েকজনের সন্দেহ হয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মার্কশিটে যেমন জলছাপ থাকে তা ছিল না বলে সন্দেহ দৃঢ় হয়। তখনই দু’জনকে ডেকে ঘরে এনে জেরা শুরু হয়।
ওই দুই ছাত্রের দাবি, “আমাদের গ্রামের পাশেই বাড়ি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য শানু মহম্মদের। শানুর মাধ্যমেই টাকা দিয়ে ওই জাল মার্কশিট জোগাড় হয়েছে।” পুলিশ শানুকে অবশ্য জেরা করেনি। যদিও শানু জানিয়েছেন, ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তাঁর দাবি, “আমি ওই দু’জনকে চিনি না।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও শানু কোনও পদাধিকারী নন বলে দাবি করেছেন দলের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি মেহেতাব চৌধুরী। তিনি বলেন, “শানু একজন সাধারণ সদস্য মাত্র। ওই অভিযোগের ব্যাপারে দলীয় পর্যায়েও তদন্ত হবে।” টিএমসিপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অজয় সরকার বলেন, “আমরা খোঁজ নিচ্ছি। এরকম জাল মার্কশিটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ হলে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে। পুলিশকেও বলা হবে ব্যবস্থা নিতে।”
কলেজের কর্মীরা জানান, জেরার মুখে দুই ছাত্র দাবি করেছে তারা ফেল করার পর থেকেই ভর্তির উপায় খুঁজছিল। দুই ছাত্রের দাবি, তখন পাশের গ্রামে শানু মহম্মদের সঙ্গে দেখা করে সে কথা খুলে বললে মার্কশিট জোগাড় করে দেওয়ার ব্যাপারে রফা হয়। এর পরে ওই ছাত্র বাড়ি থেকে টাকা জোগাড় করে তা দিয়ে জাল মার্কশিট কেনে বলে তাদের দাবি। কবে, কোন এলাকায় লেনদেন হয়েছে তা অবশ্য ছাত্ররা স্পষ্ট করে পুলিশকে জানাতে পারেনি। পুলিশ অফিসারদের কয়েকজন জানান, দুই ছাত্রের দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই শানুকে ডেকে পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy