শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি শ্মশানে ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ ছাড়াই দিনের পর দিন মৃতদেহ দাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ির জলপাইমোড় সংলগ্ন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রামঘাট শ্মশানে এমনই অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ। ওই শ্মশানে দেহ নিয়ে গেলে চিকিত্সা সংক্রান্ত ন্যূনতম কোনও নথি পর্যন্ত দেখতে চাওয়া হয় না। ওই ভাবে দেহ পোড়ানোর পরে রামঘাট কর্তৃপক্ষ একটি সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। তা পুরসভায় জমা করলে মিলছে পাকাপোক্ত ডেথ সার্টিফিকেটও।
পুলিশ-প্রশাসন-পুরসভার শিলিগুড়ির শীর্ষ কর্তারা আলাদা ভাবে হলেও একই সুরে দাবি করেছেন, এমন হয়ে থাকলে তা পুরোপুরি বেআইনি। কিন্তু, তাঁরা কেউই কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। শিলিগুড়ি পুলিশের অতিরিক্ত ডিসি ভোলানাথ পান্ডেও বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই ভাবে চিকিত্সকের শংসাপত্র ছাড়া মৃতদেহ পোড়ানো যায় না। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেব।” শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়াও বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা জানি না। এ রকম হচ্ছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”
রামঘাটের দেখভাল ও পরিচালনার ভার রয়েছে স্থানীয় খালপাড়ার অগ্রসেন মণ্ডলের উপরে। মণ্ডলের সম্পাদক ভগবতীপ্রসাদ ডালমিয়ার দাবি, “এখানে এ’ভাবেই শবদাহ হয়।” কিন্তু, বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, এই পদ্ধতিতে যে কাউকে খুন করে মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে। যদিও ভগবতীপ্রসাদবাবুর দাবি, “পরিচিত ও চেনা লোক ছাড়া এখানে কাউকে পোড়াতে দেওয়া হয় না।”
সম্প্রতি রামঘাটে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী অত্রি শর্মা। তিনি বলেন, “আমি রামঘাটে কিছুদিন আগে মায়ের দেহ নিয়ে গিয়েছিলাম। চিকিত্সকের দেওয়া শংসাপত্র জমা দিতে চাইলে সেখানকার কর্মী তা নিতে অস্বীকার করেন। এমনিই পুড়িয়ে দেওয়া হয় মায়ের মৃতদেহ।”
অথচ শিলিগুড়ি পুরসভার পরিচালনাধীন কিরণচন্দ্র শ্মশানের এক কর্মী জানান, চিকিত্সকের দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্র না দেখে পোড়ানো তো দূরের কথা, নাম নথিভুক্ত করা হয় না। এমনকী কাগজ না আনতে পারলে দেহ ফিরিয়ে দেওয়ার নজিরে রয়েছে বলে তাঁর দাবি। যদিও বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লকের অমরনাথ সিংহ পোড়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের উপরেই দায় চাপিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি পুরসভা দেখে। পুর কমিশনারই এ বিষয়ে বলতে পারবে। আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy