চাষিদের ভাবনার গুরুত্ব নেই। সরকারি খরচে চলছে দলীয় প্রচার, এই অভিযোগ তুলে কৃষি বিভাগ আয়োজিত জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ‘মাটি, কৃষি, উদ্যান পালন, মত্স্য, সমবায় ও প্রাণী সম্পদ মেলা--২০১৫’ বয়কট করলেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি নূরজাহান বেগম। শনিবার দুপুরের ঘটনা। এদিন থেকে জলপাইগুড়ির তোরোলপাড়ার নেতাজি বিদ্যাপীঠ ময়দানে শুরু হয় তিনদিনের মাটি, কৃষি, উদ্যান পালন, মত্স্য, সমবায় ও প্রাণী সম্পদ মেলা। সভাধিপতির সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণ ছাড়েন মেলা কমিটির সভাপতি তথা সদর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতিও। ওই ঘটনাকে ঘিরে প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন পড়ে যায়। মেলার আয়োজক সদর ব্লক কৃষি আধিকারিক অভিষেক নস্কর বলেন, “উদ্বোধনের অনেক আগে সভাধিপতি এবং মেলা কমিটির সভাপতি পৌঁছে যান। তখনও স্টল সাজানো হয়নি। তাঁদের বসতে বলি। কিন্তু এখানে আছি বলে ওঁরা চলে যান। কেন চলে গেলেন জানি না।”
নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর শনিবার বেলা তিনটে নাগাদ মহকুমাশাসক সীমা হালদার মেলার সূচনা করেন। কিন্তু বেলা দু’টো নাগাদ মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছে যান জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম এবং মেলা কমিটি তথা সদর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাখি বর্মন। গোটা চত্বর জুড়ে মা-মাটি-মানুষ লেখা ফ্লেক্স এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখে রেগে যান দুজন। রাখি দেবী কৃষি দফতরের কর্মীদের ডেকে জানতে চান, কৃষি মেলায় চাষিদের কথা থাকবে। সেটা না করে দলীয় সম্মেলন মঞ্চের মতো ফ্লেক্স টানানো হয়েছে কেন? মেলা কমিটির সভাপতির ওই প্রশ্ন শুনে কৃষি দফতরের কর্মীরা ঘাবড়ে যান। মিনিট কুড়ি থেকেই রাখি দেবী জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে সঙ্গে নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে যান।
মেলা কমিটির সভাপতি বলেন, “কৃষি মেলায় চাষিদের ভাবনার প্রতিফলন নেই। পুরোটা মনোরঞ্জনের সামগ্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং মা-মাটি-মানুষের স্লোগান ভরা প্রাঙ্গণ। এটা কি দলীয় সম্মেলন মঞ্চ? পরিস্থিতি দেখে সভাপতি হয়েও মেলা বয়কট করে চলে যেতে বাধ্য হয়েছি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি বলেন, “ভাবতে পারিনি সরকারি মেলাকে এভাবে দলীয় প্রচারের হাতিয়ার করা হবে। এটা মানতে পারিনি।”