বিজ্ঞপ্তি জারির পাশাপাশি বোর্ড গঠনের দিন ঠিক হলেও কোচবিহারের চার পুরসভার ভাবি চেয়ারম্যানদের নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি ডান-বাম কোনও শিবিরই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, চারটি পুরসভাতেই বোর্ড গঠনের দিন চূড়ান্ত হয়েছে। ১৮ মে তুফানগঞ্জে, ২১ মে মাথাভাঙা ও দিনহাটা পুরসভায় ও ২২ মে কোচবিহার পুরসভায় নয়া পুরবোর্ড গঠনের বৈঠক হবে। নির্ধারিত দিনে নির্বাচিত সদস্যরা শপথ গ্রহণের পর সভাপতি নির্বাচন করে বৈঠক শুরু করবেন। সেখানেই চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন হবে। কিন্তু চার পুরসভার ক্ষেত্রেই তৃণমূল বা বামেরা কেউই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মী সমর্থকের মধ্যে নয়া চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা রওনা হয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। দল সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের ঠিক করা চেয়ারম্যানদের তালিকা আনতে তাঁরা কলকাতা গিয়েছেন। অন্য দিকে বামেদের দখলে থাকা দিনহাটা পুরসভায় চেয়ারম্যান বাছতে বৈঠকের তোড়জোড় শুরু করেছে ফবও।
দলের অন্দরের খবর, কোচবিহার, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা তিনটি পুরসভাতেই তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদের একাধিক দাবিদার রয়েছেন। জেলা নেতৃত্ব কারও নাম চূড়ান্ত করলে দলের অন্দরের অন্য দাবিদারদের বিক্ষোভ প্রকাশ্যে আসার আশঙ্কা রয়েছে। তাই রাজ্য নেতৃত্বই নাম চূড়ান্ত করে মুখ বন্ধ খামে বিভিন্ন পুরসভার কাউন্সিলরদের হাতে তুলে দেবে। সিল করা খামে ওই চিঠি একেবারে শেষমুহূর্তে সদস্যদের হাতে পড়লে তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ তেমন থাকবে না, কোন্দলের আশঙ্কাও এড়ানো যাবে। মূলত কী ভাবে ওই চিঠি সদস্যদের হাতে পাঠান হবে, সে ব্যাপারে আলোচনার জন্যই তৃণমূলের ওই দুই শীর্ষ নেতা এদিন কলকাতা রওনা হন। বনমন্ত্রী বলেন, “জেলা সভাপতি চেয়ারম্যান সংক্রান্ত রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশিকা সংক্রান্ত ওই চিঠি নিয়ে আসবেন।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশন শুরু হচ্ছে বলেই কলকাতা যাচ্ছি। অন্য কোনও ব্যাপার নেই। পুরসভাগুলিতে চেয়ারম্যান কারা হবেন, তা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার পুরসভায় প্রয়াত পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুর স্ত্রী রেবা কুন্ডু, ছেলে শুভজিৎ কুণ্ডু ছাড়াও বিদায়ী বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জেলা তৃণমূল নেতা আবদুল জলিল আহমেদের স্ত্রী আমিনা আহমেদ ও ভূষণ সিংহ এবার অন্যতম পুরপ্রধান পদের দাবিদার। তুফানগঞ্জ পুরসভায় অন্তত বর্মা ও নন্দা দে’র নাম দাবিদার হিসাবে উঠেছে। মাথাভাঙা পুরসভার ক্ষেত্রে চন্দন দাস, নির্মল সাহা, বিশ্বজিৎ সাহাকে চেয়ারম্যান হিসাবে দলের অন্দরে দাবি উঠেছে।
ওই তিনটি পুরসভাতেই ভাইস চেয়ারম্যান পদের দাবিদারও একাধিক। সম্প্রতি মাথাভাঙা পুরসভায় এক সদস্য প্রকাশ্যেই দলের বৈঠকে ভাইস চেয়ারম্যান পদের দাবি জানান। তুফানগঞ্জে অম্লান বর্মা, কুন্তলা অধিকারী, রিঙ্কু সাহা ভাইস চেয়ারম্যানের দৌড়ে রয়েছেন। কোচবিহারে নির্দল প্রার্থীদের তরফেও ভাইস চেয়ারম্যানের পদের দাবি জানান হয়েছে। ফলে ওই ব্যাপারে আপাতত কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তৃণমূল নেতারা। ঠিক হয়েছে, চেয়ারম্যান নির্বাচনের পর রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ভাইস চেয়ারম্যান পদের তালিকা তৈরি করা হবে।
দিনহাটা পুরসভায় চেয়ারম্যান পদের দাবিদার হিসাবে বিদায়ী চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষ ও ফব’র জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহের নাম উঠে এসেছে। দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মী উদয়নবাবুকে ওই পদে দেখতে চাইছেন। তবে বিদায়ী পুর চেয়ারম্যান চন্দনবাবুকে ফের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিও রয়েছে। উদয়নবাবু বলেন, “শীঘ্রই ওই ব্যাপারে বৈঠক করা হবে। দল ওই ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy