Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দীপার পাড়ায় চন্দ্রিমার সভা

আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে তৃণমূলের সমাবেশকে সফল করতে এ দিন শ্রীকলোনি এলাকার প্রতিবাদ ক্লাবের মাঠে ওই সমাবেশে যোগ দেন চন্দ্রিমা।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০৫
Share: Save:

লোকসভা ভোট এগিয়ে আসছে। তারই যেন ভেরি বেজে গেল। রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হবেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। কালিয়াগঞ্জ শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকলোনি এলাকার সেই দীপার বাড়ি থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে বুধবার সংগঠনের মহিলা সমাবেশে যোগ দিলেন মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওই সমাবেশ থেকে তিনি সংগঠনের মহিলা সদস্যদের এখন থেকেই দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থনে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চালানোরও নির্দেশ দিলেন।

আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে তৃণমূলের সমাবেশকে সফল করতে এ দিন শ্রীকলোনি এলাকার প্রতিবাদ ক্লাবের মাঠে ওই সমাবেশে যোগ দেন চন্দ্রিমা। সেখানে দীপাকে গুরুত্ব না দেওয়ার সুরে তাঁর নাম না করে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে কে, কোথায়, কাকে প্রার্থী করল, তা নিয়ে তৃণমূলের কোনও মাথাব্যথা নেই। শুনেছি কংগ্রেস রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে এক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ও সব নিয়ে আমরা ভাবছি না। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রচার শুরু করতে বলেছি।’’

কেন দীপার বাড়ির অদূরে এ দিনের সমাবেশের আয়োজন করা হল, সেই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি চন্দ্রিমা।

কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের দাবি, কালিয়াগঞ্জ সহ উত্তর দিনাজপুরের রাজনীতিতে দীপার কোনও অস্তিত্ব নেই। প্রতিবার বিভিন্ন নির্বাচনের আগে তাঁকে জেলায় কয়েক ঝলক দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘‘তাই দীপাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কালিয়াগঞ্জ শহরে বড় মাঠ নেই, প্রতিবাদ ক্লাবের মাঠটি তার মধ্যে বড়। তাই জেলার ন’টি ব্লকের সদস্যাদের জায়গা দিতেই ওই মাঠে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।’’

জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের প্রার্থী দীপাকে ভয় পেয়েই তৃণমূল তাঁর বাড়ির পাশে সভা করেছে।’’

২০০৯ সালে রায়গঞ্জ আসনে লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে দীপা জয়ী হন। ২০১৪ সালে দেড় হাজার ভোটে হারেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিমের কাছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত বছর নভেম্বরে প্রিয়র মৃত্যুর পর তাঁর মৃতদেহ দেখতে জেলার ন’টি ব্লকের হাজার হাজার মানুষ রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের রাস্তায় নেমেছিলেন। প্রিয়কে নিয়ে বাসিন্দাদের সেই আবেগকে কাজে লাগাতেই লোকসভা নির্বাচনে এ বছর রায়গঞ্জ কেন্দ্রে তাঁর স্ত্রী দীপাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস।

কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব জেলায় দলের অবস্থা বুঝতে পেরেছেন। তাই শক্তিপ্রদর্শন করে কংগ্রেসের মনোবল ভাঙতে দীপার বাড়ির পাশে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।

যদিও কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল সভাপতি তথা কালিয়াগঞ্জ পুরসভার পুরপ্রধান কার্তিকচন্দ্র পালের দাবি, ‘‘নয় বছর অসুস্থ থাকার পর প্রিয়দার মৃত্যু হয়। কৌতুহলবশত সব দলের লোকজনই তাঁর মৃতদেহ দেখতে কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জে ভিড় করেন। এর সঙ্গে লোকসভা ভোটের গণিত মেলানো উচিত হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE