Advertisement
০৩ মে ২০২৪
abas yojana

আবাসের বাড়ি পেতে ‘ঘুষ’ চাই ১০ হাজার! আদিবাসী অধ্যুষিত ফাঁসিদেওয়ায় বেনিয়মই ‘নিয়ম’

আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার বহু মানুষের বাড়িই ভাঙাচোরা। তাঁদের কারও কারও নামও উঠছিল আবাসের তালিকায়। কিন্তু ‘ঘুষ’ দিতে না পারায় নাম কাটা গিয়েছে বলে অভিযোগ।

পঞ্চায়েতের কথা মতো টাকা দিতে না পারায় আবাস প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

পঞ্চায়েতের কথা মতো টাকা দিতে না পারায় আবাস প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফাঁসিদেওয়া (শিলিগুড়ি) শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৬
Share: Save:

মাটির ঘরের একাংশ ভেঙে পড়ছে। আবার কোথাও কোনও রকমে টিকে আছে একচালাটি। কিন্তু ঘরের তালিকায় নাম উঠেও তা বাদ চলে যাচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের হেলাগছ গ্রামের পুরোটাই আদিবাসী ও সাঁওতাল অধ্যুষিত। চা-বাগান ও ফসলের জমিতে দিনমজুরি করে সংসার চালে হেলাগছের বাসিন্দাদের। সে গ্রামেই অভিযোগ উঠেছে, যোগ্য গ্রামবাসীরা বাড়ি পাচ্ছেন না শুধুমাত্র পঞ্চায়েতে টাকা দিতে না পারার জন্য!

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিস্তর অভিযোগ উঠছে। হেলাগছের সুনীল মুর্মু, বাবর মুর্মু, পানসুরিদের অভিযোগ, ঘর পেতে পঞ্চায়েত বলেছে দশ হাজার টাকা লাগবে। অভিযোগ, দুই থেকে তিন বার নাম উঠেছে তালিকায়। কিন্তু টাকা না দিতে পারার জন্য নাম বাদ পড়েছে। কারও আবার অভিযোগ, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নয়, দুয়ারে সরকারের কোনও সুযোগ সুবিধাই পান না তাঁরা। পানসুরি বলেন, ‘‘আমি ও আমার স্বামী দু’জনেই কাজ করি। মাটির একটিই ঘর। সেখানেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে থাকি। সারা দিনে যা আয় হয়, তা দিয়ে শুধু সংসার চলে। এর পর দশ হাজার টাকা কোথা থেকে দেব? পঞ্চায়েত, পার্টির নেতারা দশ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের পক্ষে তা সম্ভব না। তাই আশা ছেড়ে দিয়েছি।’’

সুমি মান্ডির অভিযোগ, গ্রামে হাতে গোনা কয়েক জনের ঘর হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু তাঁদের ব্যাপার আলাদা। তাঁরা পার্টির সঙ্গে যুক্ত।’’ গ্রামবাসী বাবর মুর্মু বলেন, ‘‘তালিকায় আমার নাম উঠেছিল। কিন্তু তা কেটে দেওয়া হয়। কারণ, পঞ্চায়েত থেকে দলের নেতারা দশ হাজার টাকা করে চান। কিন্তু আমাদের পক্ষে তা দেওয়া অসম্ভব। এত টাকা যদি আমাদের পকেটেই থাকত তা হলে নিজেরাই ঘর সারিয়ে নিতাম।’’

পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আব্দুল অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘরবাবদ দশ হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমি জানি, দুয়ারে সরকারের বহু প্রকল্প সকলে পাননি। কিন্তু দশ হাজার টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যে। বিষয়টি আমি দেখব।’’

এ প্রসঙ্গে ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমার কাছে এ ধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি। যদি তাঁরা আমাকে অভিযোগ করেন তা হলে আমি জেলাশাসককে জানাব। সেই অনুযায়ী কাজ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abas yojana TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE