Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে নেশা করে ভাঙচুর ছাত্রদের

পড়ুয়াদের একাংশের কর্মকাণ্ডের জন্য এর আগেও একাধিকবার খবরে উঠে এসেছে জলপাইগুড়ি হাইস্কুলের নাম৷

ভাঙচুর: পড়ে আছে বেঞ্চের টুকরো। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙচুর: পড়ে আছে বেঞ্চের টুকরো। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

সামনেই টেস্ট পরীক্ষা৷ ফলে আর স্কুল করতে হবেনা৷ সেই ‘আনন্দে’ রীতিমত নেশা করে স্কুলের সম্পত্তি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল স্কুলেরই একদল ছাত্রের বিরুদ্ধে৷ ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি হাইস্কুলে৷ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে তিন ছাত্রকে সাসপেন্ডও করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ৷

পড়ুয়াদের একাংশের কর্মকাণ্ডের জন্য এর আগেও একাধিকবার খবরে উঠে এসেছে জলপাইগুড়ি হাইস্কুলের নাম৷ মাস তিনেক আগে বান্ধবীকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে ক্লাসের মধ্যেই লোহার পাঞ্চার দিয়ে সহপাঠীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে৷ আর এ বার দ্বাদশ শ্রেণীর কিছু ছাত্রের বিরুদ্ধে স্কুলেরই সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে৷

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে৷ টিফিনের পর শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকের ঘরে একটি বৈঠকে বসেছিলেন৷ সেই সময় তাদের কাছে খবর আসে দোতলায় দ্বাদশ শ্রেণির দুটি ক্লাসরুম ভাঙচুর হয়েছে৷ শিক্ষকেরা ছুটে গিয়ে দেখতে পান ক্লাসরুম দুটির মধ্যে একাধিক চেয়ারটেবিল ও বেঞ্চ ভাঙা৷ বাঁকানো অবস্থায় রয়েছে জানালার লোহার শিক৷ এরপরই নীচে নেমে তাঁরা দেখতে পান স্কুলের শৌচাগারেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে৷

খোদ স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রদের অভিযোগ, স্কুলের কয়েকজন ছাত্র বিড়ি, সিগারেটের সঙ্গে ডেনড্রাইট বা ড্রাগের নেশাতেও আসক্ত৷ এমনকী, নেশার টাকা জোগার করতে ওই ছাত্ররা অন্য ছাত্রদের থেকে তোলা আদায় পর্যন্ত করত৷ অভিযোগ, ওই ছাত্ররা অনেক সময় স্কুলে নেশা করেই আসে৷ কখনও বা আবার স্কুলের কোন কোণে লুকিয়েও নেশা করে৷ নেশা করেই কয়েকজন ছাত্র এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের৷

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নেমে বুধবারই দ্বাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রকে চিহ্নিত করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ৷ ওই দিনই ঘটনাটি নিয়ে স্কুলের তরফে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও জানান হয়৷ সেই সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয় তিন ছাত্রকে৷ তবে বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজন ছাত্রের নাম জানা গিয়েছে বলে স্কুল সূত্রের খবর৷

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এদের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা ধরনের ড্রাগের নেশা করা, তোলাবাজি বা অন্য নিরীহ ছাত্রদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ ছিল৷ ওদের অভিভাবকদের ডেকে বারবার সাবধানও করা হয়েছিল৷ কিন্তু তাতে কাজ হয়নি৷’’ তিনি জানান, সোমবার টেস্ট পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে বুধবারই কার্যত ছিল ওদের শেষ ক্লাস৷ আর সেই আনন্দেই এ বার ওই ছাত্ররা দুটি ক্লাসরুম ও শৌচাগার ভাঙচুর করেছে৷ ঘটনার পরই তিনজনকে চিহ্নিত করে তাদের নামে পুলিশে কাছে অভিযোগ করা হয়েছে৷ তাদের সাসপেন্ডও করা হয়েছে৷ তাদের অভিভাবকদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে৷

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি৷ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Students Drug addicted Vandalised School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE