Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তরজা সৌজন্যের মিশেল রবিবারের প্রচারে

ভোটের আগে শেষ রবিবার। পদযাত্রা থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার। পথসভা থেকে জনসভা সবই চলল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। দুই দিনাজপুরে তিনটি পুরসভায় ভোট হবে আগামী শনিবার। তার আগে শেষ ছুটির দিনের প্রচারের এতটুকু সুযোগ হাতছাড়া করলেন না ডান-বাম কোনও দলই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

ভোটের আগে শেষ রবিবার। পদযাত্রা থেকে বাড়ি বাড়ি প্রচার। পথসভা থেকে জনসভা সবই চলল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। দুই দিনাজপুরে তিনটি পুরসভায় ভোট হবে আগামী শনিবার। তার আগে শেষ ছুটির দিনের প্রচারের এতটুকু সুযোগ হাতছাড়া করলেন না ডান-বাম কোনও দলই।

এদিন দুপুরে ইসলামপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে পদযাত্রা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। এ দিনই ওই ওয়ার্ডেই বাড়ি বাড়ি প্রচার করেছেন রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী। এই ওয়ার্ডেই প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা ইসলামপুরের বিধায়ক মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীর ছেলে মেহেতাব চৌধুরী। এ দিন অন্য ওয়ার্ডেও প্রচার করেছেন মন্ত্রী। সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকাতে পথসভাও করেছেন তিনি। শহর জুড়ে প্রচার চালিয়েছেন দীপা দেবীও। ১৩ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে দিনভর পদযাত্রার পরে সন্ধ্যেতে পথসভাও করেছেন প্রাক্তন সাংসদ। ভোট প্রচারে প্রাক্তন সাংসদ এবং বর্তমান মন্ত্রীর মধ্যে তরজাও চলেছে এ দিন।

কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল জেতার জন্য ভোট লড়ছে না, কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপিকে জেতাতে চাইছে ওরা।’’ সরাসরি জনশিক্ষা মন্ত্রীকে আক্রমণ করে দীপা বলেন, ‘‘এলাকাতে উনি কী উন্নয়ন করেছেন সেটা বাসিন্দাদের বলুন। ওরা শুধু চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার লোকেদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। বাসিন্দারা সবই জানেন।’’ উত্তরে মন্ত্রী করিম চৌধুরী বলেন, ‘‘গত ১৫ বছরে কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভা কোনও উন্নয়ন করেনি। ইসলামপুর দেখে তো শহর বলেই মনে হয় না। শহরের উন্নয়নের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে আমার কাছে কোনও প্রস্তাব পাঠানো হয়নি।’’ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, পলিটেকনিক কলেজ, কৃষক বাজার সহ এলাকায় একাধিক পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে মন্ত্রী দাবি করেছেন।

এদিন ইসলামপুরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে পথসভা করেন রাজ্যের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। কালিয়াগঞ্জ পুরসভায় এ দিন পদযাত্রা ও একাধিক পথসভা করেছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রীতেশ তিওয়ারি। রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রীতেশবাবু কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ৬ নম্বর ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পদযাত্রা করে চারটি পথসভায় বক্তব্য রাখেন। অন্য দিকে, এদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত কালিয়াগঞ্জের ২, ৩, ১২ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে একাধিক পথসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য, দলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পাল ও জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি পূর্ণেন্দু দে। কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের প্রার্থীরা এদিন শহরের ১৭টি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রচার চালিয়েছেন।

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে এ দিন আকাশ ছিল মেঘলা। তৃণমূলের তরফে শহর জুড়ে প্রচার চালিয়েছে। ছুটির দিনে শুকদেবপুরের বাড়ি থেকে জেলাপরিষদের সহকারি সভাধিপতি কালীপদ সরকার থেকে তৃণমূলের মহিলা কর্মাধ্যক্ষ কবিতা রায়েরা শহরের দুর্গাবাড়ি মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে হাজির হয়ে প্রার্থীদের নিয়ে এলাকায় প্রচার করেছেন। দল বেঁধে রাস্তায় নেমে গঙ্গারামপুরে দলের তরফে পর্যবেক্ষক প্রশান্ত মিত্রের নেতৃত্বে শাখা সংগঠনের কর্মী নেতারা প্রার্থীদের নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন। তৃণমূল শিক্ষক সমিতিও দলের প্রার্থীদের সমর্থনে শহরে বিরাট মিছিল বের করেন। একটি অটোর দু’দিকে মাইকের চোঙ লাগিয়ে লালা পতাকা ঝুলিয়ে সিপিএমের তরফে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চালানো হয়েছে।

এ দিন প্রচারে মুখোমুখি হয়ে সৌজন্য বিনিময় করলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র ও সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায়। রবিবার বিকালে কোচবিহারে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে অংশ নেন সোমেনবাবু। সেই সময় ওই এলাকায় বাম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন সিপিএম নেতা তারিণীবাবু। ব্যাংচাৎড়া রোডে তাঁরা মুখোমুখি হন। সৌজন্য বিনিময়ের পাশাপাশি করমর্দন করেন তাঁরা। সোমেনবাবু বলেন, “রাজনৈতিক লড়াই আলাদা। তারিণীবাবুর সঙ্গে পুরনো পরিচয় আছে। সেই জন্য দেখা হতে সৌজন্য কথা হয়েছে।” তারিণীবাবু একসময় রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। তিনি বলেন, “সাংসদ থাকাকলীন সোমেনবাবুর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। অনেকদিন পর দেখা হল তাঁর সঙ্গে। তাই সৌজন্য বিনিময় করে কথা বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE