Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গণ্ডগোলে নির্বিকার

রায়গঞ্জ পুরসভা নির্বাচন চলাকালীন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বুথের বাইরে গুলি ও বোমা ছোড়ার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ঘটনারও কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। ফলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার তো দূরের কথা, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেনি পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০৩:৪৮
Share: Save:

রায়গঞ্জ পুরসভা নির্বাচন চলাকালীন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বুথের বাইরে গুলি ও বোমা ছোড়ার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ঘটনারও কোনও মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। ফলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার তো দূরের কথা, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজও শুরু করেনি পুলিশ। উল্টে নির্বাচনের দিন যে সমস্ত ভোটাররা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সরব হয়েছিলেন, তাঁদেরই চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

তবে রবিবার ভোটের দিন ‘তৃণমূলের সন্ত্রাসে’র অভিযোগে পথ অবরোধ বিক্ষোভ করায় বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করল পুলিশ। প্রদীপের বিরুদ্ধে পুলিশ ৩৩২, ৩৫৩, ৩৪১, ২৮৩ ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। তার মধ্যে পুলিশকে মারধর ও কাজে বাধাদানের অভিযোগে ৩৩২ ও ৩৫৩ ধারা জামিন অযোগ্য। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করেছে।’’

প্রদীপের বক্তব্য, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। যা বলার দলের জেলা সভাপতি বলবেন।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, ‘‘ভোটের দিন তৃণমূল সন্ত্রাস করল, কিন্তু সে জন্য কাউকে গ্রেফতার করা হল না। অথচ আমাদের এক নেতার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই মামলা দায়ের করা হল। এ থেকেই বোঝা যায়, পুলিশ কাদের পক্ষে কাজ করছে।’’

কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, ভোটের দিন গুলি বোমা ছোড়া নিয়ে কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। গুলি বোমা ছোড়ার কোনও প্রমাণও তারা পাননি। তাই এ ব্যাপারে মামলা করা হয়নি।

কেন বিরোধীরা কোনও অভিযোগ করলেন না?

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল ও বিজেপির নির্মলবাবু পৃথক ভাবে হলেও একই সুরে দাবি করেছেন, পুলি‌শ শাসক দলের হয়েই কাজ করছে, তাই তাঁরা অভিযোগ জানাতে চাননি।

তবে ওই দিন ভোট চলাকালীন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বুথের সামনে কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই যুবককে আটক করে। সোমবার তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মিঠুন আলি ও মিঠুন সাহা। মিঠুনের বাড়ি রায়গঞ্জের অভোর এলাকায়। পুলিশের দাবি, মিঠুন আলির কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও এক রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, সে তৃণমূল সমর্থক! রায়গঞ্জের বন্দর এলাকার বাসিন্দা মিঠুন সাহা কংগ্রেসের কর্মী। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে।

বিরোধীদের দাবি, আগ্নেয়াস্ত্র সমেত ওই তৃণমূল সমর্থক গ্রেফতার হওয়াতেই তা স্পষ্ট হয়েছে, কারা গোলমাল করেছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘বিজেপি নেতা কর্মীরাই একাধিক ওয়ার্ডে তৃণমূলের কর্মীদের লাঠিপেটা করে ছাপ্পাভোট দিয়েছেন। পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগের ঘটনার নিন্দা করছি। আইন আইনের পথে চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE