প্রতিমার সৌন্দর্য দেখতে মণ্ডপে ঢল নেমেছে দর্শনার্থীদের। আলোকসজ্জাও তাক লাগিয়েছে সবাইকে। কিন্তু নজরদারিতে ধরা পড়ল মণ্ডপে অথবা আশেপাশে দেদার ধূমপান হয়েছে। তাতেই কিন্তু হাতছাড়া হতে পারে সেরা পুজোর পুরস্কার। এবারের পুজোয় প্রকাশ্যে ধূমপান রুখতে এতটাই কড়াকড়ি চলবে শিলিগুড়িতে।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, শিলিগুড়ির সব পুজো মণ্ডপকে ‘পাবলিক প্লেস’ ঘোষণা করে ধূমপান নিষিদ্ধ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হবে। কোনও পুজো উদ্যোক্তা মণ্ডপ এবং আশেপাশের এলাকায় ধূমপান রুখে দিতে পারলে সরকারি পুরস্কারের ক্ষেত্রে বিচার প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত নম্বর পাবে। উল্টে যে পুজো মণ্ডপে ধূমপান চলবে তাদের নম্বর কাটা যাবে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দ্রুত এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশিকা প্রকাশ
করা হবে।
গত ১৫ অগস্ট থেকে দার্জিলিং জেলায় ‘পাবলিক প্লেসে’ ধূমপান নিষিদ্ধ হয়েছে। পাহাড়-সমতল দু’জায়গাতেই অভিযান-প্রচার চলছে। ‘পাবলিক প্লেসে’র সংজ্ঞা অনুযায়ী পুজো মণ্ডপগুলি এর আওতায় না পড়লেও, জেলা প্রশাসন বিশেষ নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে। ওই নির্দেশিকায় পুজো মণ্ডপগুলিকে ‘ধূমপান মুক্ত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কিন্তু কী ভাবে চলবে নজরদারি?
এ ক্ষেত্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাই ভরসা প্রশাসনের। নিরাপত্তার কারণে বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপগুলিতে ঢোকা এবং বের হওয়ার মুখে পুলিশের তরফেই ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়। পুজো উদ্যোক্তাদেরও মণ্ডপের ভিতরে অথবা আশেপাশে ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেয় প্রশাসন। সে ক্যামেরাগুলিতে প্রতিনিয়ত নজরদারি চালায় পুলিশ।
সেই ফুটেজেই জানা যাবে, মণ্ডপের আড্ডায়, আশেপাশের ফাস্ট ফুডের স্টলে কারও হাতে সিগারেট জ্বলছে কিনা। বিগ বাজেটের হোক বা ছোটো পুজো সব ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য। তবে ছোট মণ্ডপগুলিতে নজরদার ক্যামেরা থাকে না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-সিভিক ভলান্টিয়াররা মোতায়েন থাকেন। এ বার নজরদারি চালাবেন তারাই।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে জেলায় ধূমপায়ীর সংখ্যা বাড়ছে। উৎসবের সময়ে ধূমপানের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে যিনি ধূমপান করছেন তিনি ছাড়াও আশেপাশের সকলেরই নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এবার পুজো মণ্ডপেও ধূমপান নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
পুজো মণ্ডপগুলিতে ধূমপান বিরোধী সচেতনতা প্রসারের আর্জিও জানাবে প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০০৯ সালের ক্যাট সমীক্ষা অনুযায়ী দার্জিলিং জেলায় ধূমপায়ীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। সরকারি দফতরে ধূমপান রুখতে একজন করে নোডাল অফিসারও মনোনীত করেছে প্রশাসন। স্কুল চত্বরের ১০০ গজের মধ্যে সিগারেট, বিড়ি, গুটখা বিক্রি বন্ধ করতে আগামী সপ্তাহ থেকেই অভিযান শুরু হবে শিলিগুড়িতে। কড়াকড়ি করে জেলায় ধূমপায়ীর সংখ্যায় রাশ টানতে চাইছে জেলা প্রশাসন। তাই নজরদারিতে বাদ যাচ্ছে না পুজো মণ্ডপের আড্ডাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy