Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বহিরাগতরা এলাকা ‘কব্জা’ করেছে, ক্ষোভ

তৃণমূলের বিরুদ্ধে এক রাতেই বহিরাগতদের পাড়ায় ঢুকিয়ে ‘বুথ-কব্জা’ করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। শহরের আশপাশের এলাকা থেকে বুধবার রাতেই তৃণমূলের বহিরাগত বাহিনী ঢুকে এলাকা ‘কব্জা’ করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের পাল্টা দাবি, বুথে বসানোর মতো কর্মী সমর্থক না পেয়ে বিরোধীরা মনগড়া অভিযোগ তুলেছে।

গঙ্গারামপুরে ভোটের প্রস্তুতিতে। —নিজস্ব চিত্র।

গঙ্গারামপুরে ভোটের প্রস্তুতিতে। —নিজস্ব চিত্র।

অনুপরতন মোহান্ত
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৬
Share: Save:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে এক রাতেই বহিরাগতদের পাড়ায় ঢুকিয়ে ‘বুথ-কব্জা’ করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। শহরের আশপাশের এলাকা থেকে বুধবার রাতেই তৃণমূলের বহিরাগত বাহিনী ঢুকে এলাকা ‘কব্জা’ করেছে বলে অভিযোগ সিপিএমের। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের পাল্টা দাবি, বুথে বসানোর মতো কর্মী সমর্থক না পেয়ে বিরোধীরা মনগড়া অভিযোগ তুলেছে।

শুক্রবার দিনভর সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস সহকর্মী নেতাদের নিয়ে ঘন ঘন বৈঠকে ব্যস্ত থাকলেন। অন্যদিকে তৃণমূলের সেনাপতি বিপ্লব মিত্র যেন ছিলেন খানিকটা হালকা মেজাজে। এ দিন তিনি খানিক দেরি করেই ঘুম থেকে ওঠেন বলে দল সূত্রে জানা গিয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টায় ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির অফিস ঘরে বসে কর্মীদের সঙ্গে কাটালেন। বিরোধীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাঁর বাড়ির ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী জিতে গিয়েছেন। ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন তাঁর ভাই প্রশান্তবাবু।

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পুরভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে শুক্রবার এই ছিল যুযুধান দুই শিবিরের প্রধান সেনাপতির ভোটনামচা। গঙ্গারামপুরে ‘দুর্গ’রক্ষায় কঠিন চ্যলেঞ্জের মুখে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস। বিগত চার বারে এক টানা ২০ বছর গঙ্গারামপুর পুরসভা সিপিএমের দখলের পর এ বারে দুর্গ ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ের ময়দানে নেমে তৃণমূল শুরুতেই বিরোধীদের দু’টি ‘ধাক্কা’ দিয়েছে। বিপ্লববাবুর বাড়ির ওয়ার্ড ওই ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও ১১ নম্বর ওয়ার্ডেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। ফলে গঙ্গারামপুরে ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ভোট হচ্ছে ১৬টি ওয়ার্ডে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে স্থানীয় কালদিঘি, শুকদেবপুর, নয়াবাজার-সহ আশপাশের সমস্ত এলাকা থেকে সমাজবিরোধীরা গঙ্গারামপুর শহরে ঢুকে পড়েছে বলে সিপিএমের জেলাসম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস এ দিন অভিযোগ করেন। গভীর রাত অবধি পিকনিক এবং দলীয় প্রার্থীদের বাড়ির সামনে হুমকি সমানে চলেছে বলে বিজেপির জেলা সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ওই বাহিনী ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার রাতে দলের অস্থায়ী শিবির পুড়িয়ে দিয়েছে। বামেদের ফ্ল্যাগ ফেস্টুনও পুড়েছে। এ দিন শহরে পুলিশি টহল চোখে পড়েনি বলে তাদের অভিযোগ। বাম এবং বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এই পরিস্থিতি গঙ্গারামপুরে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হওয়া সম্ভব নয়। সিপিএমের নারায়ণবাবু এবং বিজেপির গৌতমবাবু দাবি করেন, ‘‘বহিরাগতরা এলাকা কব্জা করে ফেলেছে। অবাধ ভোট হবে কী করে!’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রও বিরোধীদের বহিরাগত তত্ত্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, ‘‘বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, হিলি-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের কর্মী নেতারা ভোটের দিন গঙ্গারামপুরে আসতে চেয়েছিলেন। আমি বারণ করে দিয়েছি। এখানে ভোট করতে বহিরাগতের সাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বুথে বসানোর লোক না পেয়ে সিপিএমের এখন মিথ্যা অভিযোগ তোলা ছাড়া কিছু করার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE