Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাসে আগুনে মৃত্যুর তদন্তে ফরেন্সিক দাবি

বাসের ভিতর আগুন পুড়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাইল দার্জিলিং থানার পুলিশ। বাসে কোনও দাহ্য পদার্থ ছিল কি না, তা জানতে চেয়ে কলকাতার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের চিঠি দিয়েছেন তাঁরা।

পুলিশ ক্যাম্পে পোড়া বাস। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ ক্যাম্পে পোড়া বাস। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
ফাঁসিদেওয়া শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

বাসের ভিতর আগুন পুড়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নেমে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাইল দার্জিলিং থানার পুলিশ। বাসে কোনও দাহ্য পদার্থ ছিল কি না, তা জানতে চেয়ে কলকাতার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। সোমবার ফাঁসিদেওয়ার থানার তরফে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবে চিঠি পাঠানো হয়। রবিবার সন্ধ্যার ঘটনার পর বাসটিকে বিধানগরের মুরলিগছ থেকে ঘোষপুকুর পুলিশ ক্যাম্পে এনে রাখা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বাসটির যাত্রী, কর্মীদের বয়ান অনুসারে সামনের অংশে আগুন ধরে। পরে একবার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে যায়। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটি সেই সময় বন্ধ ছিল। শীততাপ যন্ত্র থেকে না কি, বাসের ভিতরে কোনও দাহ্য পদার্থ থেকে আগুন লাগল তা জানা দরকার। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘কী ভাবে আগুন লাগল তা পরিষ্কার নয়। তাই ফরেন্সিকের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।’’

এ দিনই বাসে পিছনের আসনে পুড়ে যাওয়া মৃত যুবকের পরিচয় উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রিটন শেখ (২৮)। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা রিটন গত ৪ বছর ধরে খালাসি হিসাবে কাজ করছিলেন। তাঁর দাদা চন্দন শেখ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে পুড়ে যাওয়া দেহটির এক হাতের বালা দেখে ভাইয়ের দেহ বলে শনাক্ত করেন। পেশায় সব্জি ব্যবসায়ী চন্দনবাবু বলেন, ‘‘ভাই সম্ভবত পিছনের আসনে ঘুমিয়ে পড়েছিল। আগুন, ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হতেই আর বার হতে পারেনি। এ ভাবে ভাইকে হারাব তা ভাবতে পারছি না।’’

পুলিশ তদন্তে জেনেছে, বেসরকারি বাসটি বিকালে জংশন এলাকা থেকে ছেড়ে মুর্শিদাবাদের উমরপুরের দিকে যাচ্ছিল। ৪৫ আসনের বাসটির ভিতরে উপরের অংশে শোওয়ার ব্যবস্থা ছিল। ১৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি ৪টে নাগাদ রওনা হয়। রাস্তা থেকে আরও ৫ জন উঠেছিল। বাসের যাত্রী তথা ডাবগ্রামের বাসিন্দা অমিত অধিকারী জানান, ব্যবসার কাজে ধুলিয়ানে যাচ্ছিলেন। মুরলিগছের কাছে সামনের দিকে আওয়াজ শুনতে পান। তারপরেই আগুন দেখতে পান। চালক বাস দাঁড়াতেই সবাই হুড়মুড় করে নেমে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘তার পরে বিরাট আওয়াজে বিস্ফোরণ হয়। কয়েক মিনিটের জন্য বরাত জোরে প্রাণে বেঁচেছি। কী ভাবে আগুন লাগল বুঝতে পারিনি। জিনিসপত্র পড়ে গিয়েছে।’’

রাতেই বাসের চালক সুধীরকুমার ঝা’কে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাসের কন্ডাক্টর রাজীব শেখ বলেন, ‘‘বাসটিতে সমস্যা ছিল না। কী ভাবে আগুন লাগল, আমরাও জানি না। দাহ্য কিছু তো ছিল না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, জংশন এলাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্য ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ডের বেসরকারি বাসগুলি ছাড়ে। মাথায় মালপত্র ছাড়াও অনেক সময়ই দাহ্য জিনিসপত্র নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুড়ে যাওয়া বাসটির মালিক ধুলিয়ানের এক ব্যক্তির হলেও শিলিগুড়ির একটি ট্রাভেল এজেন্ট সেটিকে বুকিং করে চালায়। সংস্থার পক্ষে বিপিন গুপ্ত জানান, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি না কী ভাবে আগুন লাগল। তবে অতিরিক্ত মালপত্র বা দাহ্য কিছুই বাসে তোলা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Forensic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE