কার্ল মার্ক্সেও আছে, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীতেও আছে।
সোমবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে শহরে কার্ল মার্ক্সের মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত পেশ করেন শিলিগুড়ির মেয়র পারিষদেরা। একই সঙ্গে শহরে গাঁধীর মূর্তি বসানোর কথাও জানানো হয়েছে। তবে তরজা শুরু হয়েছে মার্ক্সের মূর্তি বসানো নিয়ে। এই সিদ্ধান্তে দুই শিবিরে বিভক্ত হয়েছেন পারিষদেরা।
গাঁধীর মূর্তি বসানোর বিষয়টি বুঝতে পারলেও মার্ক্সের মূর্তি কী কারণে বসানো হবে তা বুঝতে পারছেন না বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার তা নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। মেয়র পাল্টা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন বসানো হবে না সেটা বলুন।’’ বিরোধীদের দাবি সেই জবাবদিহি মেয়রকেই করতে হবে।
রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গাঁধীর অবদান জানি। তাঁর মূর্তি বসানো যেতেই পারে। কিন্তু দেশের জন্য কার্ল মার্ক্সের ভূমিকা কী জানা নেই। তাই আমরা প্রতিবাদ করছি।’’ তাঁর দাবি, অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী রয়েছেন যাঁদের অবদান ভোলার নয়। তাঁদের অনেকেরই মূর্তি নেই। মূর্তি বসাতে হলে তাঁদেরগুলোই আগে বসাতে হবে। তাই প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। কোথায় বসানো হবে, কোথা থেকে অর্থ আসবে বলে ভাবা হয়েছে সে সব কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি তাঁর। একই ভাবে প্রতিবাদ জানান, কৃষ্ণ পাল, নান্টু পালের মতো তৃণমূল কাউন্সিলররাও।
মেয়র বলেন, ‘‘গাঁধী এবং কার্ল মার্ক্সের ২০০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ওই দুই মনীষীর মূর্তির বসানো হবে। মার্ক্সের মতো দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ কমই রয়েছেন।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ সিংহ মেয়রের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, ‘‘রঞ্জনবাবু কেন বিরোধিতা করছেন বুঝতে পারছি না। মার্ক্সের মতো মনীষীকে সারা পৃথিবী শ্রদ্ধা করে। তাঁর মতো ব্যক্তিত্বের মূর্তি বসানো হবে বলে কেন আপত্তি করা হচ্ছে?’’
শহরে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ক্ষুদিরাম, নেতাজি, বিবেকানন্দ, বিআর অম্বেডকরের মূর্তি রয়েছে। রয়েছে বিনয়, বাদল, দীনেশের মূর্তি। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, বাঘা যতীনের মতো মনীষীদের মূর্তি বসানোর প্রসঙ্গও ওঠে মাঝেমধ্যেই। শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা সুজয় ঘটক জানান, গাঁধীর মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত তাঁদের পুরবোর্ড থাকার সময়ই হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গোত্রী দত্ত মেয়র থাকার সময় গত পুরবোর্ড হাসমি চকে গাঁধীর মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তা শেষ পর্যন্ত আমরা করে যেতে পারিনি।
শহরে গাঁধীর মূর্তি হোক তা শহরবাসী অনেকেই চান। কিন্তু কার্ল মার্ক্সের মূর্তি বসিয়ে মেয়র রাজনীতি করতে চাইছেন।’’ মালতী রায়, খুশবু মিত্তালের মতো বিজেপি কাউন্সিলরদের প্রশ্ন, দেশের অনেক মনীষীই তো রয়েছেন। তাঁদের বাদ দিয়ে মার্ক্সের মূর্তি কেন বসানো হচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।
মেয়র জানান, অর্থ বরাদ্দ থেকে কোথায় মূর্তিগুলো বসানো হবে তা ঠিক করা হবে। ফ্যাসিবাদীরা মার্ক্সের, লেনিনের মূর্তি অনেক জায়গায় ভেঙেছে। তবে কলকাতায় ভাঙতে পারেনি। শিলিগুড়িতেও মূর্তি থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy