জলমগ্ন: শিলিগুড়ির হাসপাতাল মোড় বৃষ্টিতে জলে ভাসছে। নিজস্ব চিত্র
ধারাবাহিক বৃষ্টিতে সোমবার শিলিগুড়ি শহরের বেশ কিছু এলাকায় জল জমে জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। মঙ্গলবারও কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শিলিগুড়ি পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিলিগুড়ি গার্লস হাই স্কুলের প্রধান রস্তার পাশের নর্দমা উপছে জল নেমেছে রাস্তায়। বিধান মার্কেটের সবজি বাজারের রাস্তা জল জমে বেহাল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকেছে এদিন। মঙ্গলবারেও শিলিগুড়ি হাসপাতাল মোড়ে হাঁটু জল পার করে যাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। বিপর্যয়ের মুখে পড়েন রোগী নিয়ে আসা অনেকেই।
এ ছাড়া অশোকনগর, হায়দার পাড়াতেও জল জমেছে। পুরসভার পক্ষ থেকে জল যাতে তাড়াতাড়ি নেমে যায় তার জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ডের নর্দমা গুলি সাফাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, ৬, ১৩ ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে যান। মেয়র জানান, যে সমস্ত এলাকায় বৃষ্টির জল জমেছে পুরসভার পক্ষ থেকে যাতে তাড়াতাড়ি জল নেমে যায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শিলিগুড়ির পাইকারি বাজারের অবস্থাও ছিল শোচনীয়। রাস্তার ধারে জমে থাকা জঞ্জাল-জল মিশে পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে পড়ে। শিলিগুড়ি নাগরিক সমিতির মুখপাত্র রতন বণিক বলেন, ‘‘বর্ষার সময়ে বাজারের ভিতরের রাস্তা পরিচ্ছন্ন রাখতে কেন আগাম উদ্যোগী হয় না পুরসভা, সেটা বোঝা মুশকিল। তা ছাড়া বৃষ্টির দিনে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে কেনাবেচা করতে পারেন সেটা দেখাও তো পুরসভার দায়িত্ব। আমরা স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ভাবছি।’’
পশ্চিম ভারতের কিছু অংশ ছাড়া গোটা দেশ জুড়েই মৌসুমী বায়ু অতি মাত্রায় সক্রিয়। তার ফলে এখন টানা কয়েকদিন শিলিগুড়িতে বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণের পরে তাঁরা জানিয়েছেন, উত্তর পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ থেকে শুরু হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। ফলে বাড়তি বৃষ্টিপাত হচ্ছে শিলিগুড়ি-সহ লাগোয়া এলাকায়। অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে দার্জিলিং, সিকিম পাহাড়ের কয়েকটি এলাকায়।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘নিম্নচাপ অক্ষরেখা সক্রিয়। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় মৌসুমী বায়ুর জোরাল উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাই আপাতত দু’-তিন দিন বৃষ্টি চলবে। অতি মাত্রায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।’’
এদিন দার্জিলিং, সিকিমের কয়েকটি জায়গায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। এই মুহূর্তে পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। তবে যাঁরা রয়েছেন বৃষ্টির জন্য ঘরবন্দি ছিলেন বলে জানিয়েছেন টুর অপারেটররা।
উত্তরবঙ্গের টুর অপারেটরদের এক মুখপাত্র সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘বর্ষার সময়ে ডুয়ার্সের কয়েকটি এলাকায় পর্যটকদের ভিড় রয়েছে। পাহাড়ে অবশ্য খুবই কম। তবে এমন টানা বৃষ্টি হলে ঘরে বসে তা উপভোগ করা ছাড়া উপায় নেই। অনেকে শুধু সে জন্যই পাহাড়-ডুয়ার্সে আসছেন। এটাও একটা খুবই ভাল ব্যাপার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy