Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরবঙ্গ মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের দাবি

দক্ষিণবঙ্গে যাই ঘটুক না কেন এখানে তাঁরা বড়মা’র পক্ষে এক রয়েছেন, সেই বার্তা দিয়ে ‘উত্তরবঙ্গ মতুয়া উন্নয়ন পর্যদ’ গঠনের দাবি জানাল সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

দক্ষিণবঙ্গে যাই ঘটুক না কেন এখানে তাঁরা বড়মা’র পক্ষে এক রয়েছেন, সেই বার্তা দিয়ে ‘উত্তরবঙ্গ মতুয়া উন্নয়ন পর্যদ’ গঠনের দাবি জানাল সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটি।

সম্প্রতি মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর উদ্বাস্তু এবং পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাতে মতুয়াদের মধ্যে বিভাজন রাজনীতি নিয়ে সোরগোল পড়েছে। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের উত্তরবঙ্গ কমিটির সভাপতি মণিমোহন বিশ্বাস বলেন, “গত সাড়ে তিন বছরে মঞ্জুলবাবু মতুয়াদের জন্য কিছুই করতে পারেননি। আমরা উত্তরবঙ্গ থেকে বারবার তাঁর কাছে মতুয়াদের জন্য জমির পাট্টা-সহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া জানিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুই হয়নি। শংসাপত্র পেতে পর্যন্ত মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে। মতুয়াদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আমরা চাই উত্তরবঙ্গের জন্য মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করা হোক। দক্ষিণবঙ্গে যাই হোক উত্তরবঙ্গে আমরা বড়মার পক্ষেই এক রয়েছি।”

এরপরে কারও নাম না করে তাঁর অভিযোগ, “কোনও সম্প্রদায়ের ৫ হাজার লোক রয়েছে এমন অনেক সম্প্রদায় আলাদা উন্নয়ন পষর্র্দ পাচ্ছে। উত্তরবঙ্গে আমরা ৪২ লক্ষ মানুষ রয়েছি। তা হলে আমরা কেন পাব না?” উত্তরবঙ্গে ৯৯ শতাংশ মতুয়া সম্প্রদায়ের বাসিন্দা দরিদ্র পরিবারের বলে দাবি করেন তাঁরা।

কমিটির কর্মকর্তারা মনে করেন তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে বিভিন্ন বার্তা সঠিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছচ্ছে না। উত্তরবঙ্গে উত্তরকন্যা চালু হল। সরকারি ভাবে বিভিন্ন কিছু হচ্ছে। কিন্তু মতুয়াদের সে সব অনুষ্ঠানে ডাকা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মণিবাবু, কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুমার বিশ্বাস, শিবু সিংহরা। তাঁদের দাবি রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরেই মতুয়াদের পরিচিতি ছড়িয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য যে উন্নয়ন কাজ করা দরকার ছিল, তা হয়নি। যাদের উপর দায়িত্বে ছিল তারা কিছু করেননি।

মণিবাবুরা জানান, তাঁরা বড়মা বীণাপাণি দেবীর পক্ষে। বড়মা’র পরবর্তীতে তারা মঞ্জুলবাবু বা তার উত্তরসূরিদের মেনে নেবেন না। বরং ভক্তরা কমিটি করে চালাবেন। সুবীরবাবু বলেন, “মঞ্জুলবাবু নিজে লালবাতি গাড়িতে ঘুরেছেন। কিন্তু মতুয়া ভক্তদের লালবাতি জ্বলেছে।” মঞ্জুলবাবু মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তা নিয়েও সমালোচনা করেন উত্তরবঙ্গ কমিটির কর্মকর্তারা। মণিবাবু বলেন, “উনি নাগরিকত্ব নিয়ে ঠিক কথা বলছেন না। এমনকী বাংলাদেশ থেকে নিপীড়িত হয়ে যে সব মতুয়ারা এ দেশে আসবে, তাদের দ্রুততার সঙ্গে নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি তুলছি আমরা।”

এ দিন কার্যত মিছিল করে সাংবাদিক বৈঠকে আসেন মতুয়া সম্প্রদায়ের ওই মানুষেরা। মঞ্জুলবাবুর পর উদ্বাস্তু এবং পুনর্বাসন দফতরের ভার দেওয়া হয়েছে সাবিত্রী মিত্রের হাতে। তা নিয়ে সরাসরি আপত্তি না জানালেও সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির কর্মকর্তারা চান তাদের সম্প্রদায়ের যে বিধায়করা রয়েছেন তাদের মধ্য থেকে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।

শিলিগুড়ির উপকন্ঠে কাওয়াখালি এলাকায় প্রস্তাবিত উপনগরীর জায়গায় হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে হাট ছিল। হাটের জায়গা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তাঁরা জানিয়েছিলেন। মণিবাবু জানান, অনিচ্ছুকদের ওই সমস্ত জমি ফেরানোর ব্যাপারে গত ১৫ জানুয়ারি শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দফতরে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে সেই কাজ সম্পন্ন করতে মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri matua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE