অনৈতিক ভাবে জিটিএ-র আওতাধীন দফতরের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব, বৃহস্পতিবার এমনই অভিযোগ তুললেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে জিটিএ-র কোনও ভুল বোঝাবুঝি বা সম্পর্কের অবনতি হলে জেলাশাসকই দায়ী থাকবেন বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের গোর্খা রঙ্গমঞ্চে অস্থায়ী শিক্ষকদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “জেলাশাসক আমাদের কিছু না জানিয়ে বিভিন্ন দফতরের কাজে নাক গলাচ্ছেন। ওই দফতরগুলির মধ্যে খাদ্য সরবরাহ দফতর অন্যতম। দফতরটি জিটিএতে চলে এসেছে, তার পরেও জেলাশাসক তা মানছেন না। এই নিয়ে রাজ্য সরকার এবং জিটিএ-র সম্পর্কের অবনতি হলে জেলাশাসকই দায়ী থাকবেন।”
তবে জেলাশাসক ঠিক কী ভাবে কাজে হস্তক্ষেপ করছেন, তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু বলতে চাননি গুরুঙ্গ। তিনি বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। জিটিএ একটি স্বশাসিত সংস্থা। এর সদস্যেরা নির্বাচিত। সেক্ষেত্রে কাউকে কিছু না জানিয়ে কাজ করাটা ঠিক নয়। এটা বন্ধ না বলে প্রয়োজনে আমরা জেলাশাসকের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হব।”
যদিও গুরুঙ্গের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “আমি জানি না, জিটিএ চিফ ঠিক কী মন্তব্য করেছেন বা আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ করেছেন। এতটুকু বলতে পারি, জিটিএ-র কাজে আমি বা আমার দফতর থেকে কোনও হস্তক্ষেপ করা হয় না।” জেলাশাসকের কথায়, “আমি পাহাড়ে যখন কাজে যোগ দিয়েছি, তখন থেকেই পাহাড়ের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। আমি চাই এটা বজায় থাকুক। জিটিএ-র সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল থাকুক।”
জিটিএ সূত্রের খবর, সম্প্রতি জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন ডিস্ট্রিক্ট কনজুমার প্রোটেকশন কাউন্সিলের সদস্যেরা পাহাড়ের বিভিন্ন রেশন দোকান, বাজার এবং ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানগুলির পরিদর্শন করেন। সেগুলিতে কোনও অনিয়ম চলছে কি না, তা নিয়ে দলটি খোঁজখবর করে। ওই কাউন্সিলের প্রধান হিসাবে গত ২৮ নভেম্বর জেলাশাসক, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি, জিটিএ বিভিন্ন দফতর এবং স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে বৈঠকও ডাকেন। সেখান থেকেই বাজার, রেশন দোকান, ন্যায্য মূলের ওষুধের দোকানে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় বলে অভিযোগ। জেলাশাসকের দাবি, এই ধরনের কাউন্সিল অন্য জেলাগুলিতেও রয়েছে। সব দফতরকে নিয়ে বৈঠক করে কাজ করা হয়। আর যা করা হয়, তাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হন। আমরা পাহাড়ে যে অভিযান চালিয়েছি, মানুষ তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর আগেও পাহাড়ের রাস্তা তৈরি থেকে সরকারি তহবিল নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে জিটিএ। এ দিন গুরুঙ্গ জানিয়েছেন, চলতি মাসেই জিটিএ-র সামগ্রিক বিষয় নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে বা ১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় বৈঠক হতে পারে। এই বিষয়গুলিও সেখানে আলোচনা হবে। এদিনও তৃণমূল প্রভাবিত জিটিএ-র ১৯০ জন কর্মী তাদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে মোর্চা সভাপতি জানিয়েছেন। পাতলেবাসে মোর্চার সদর দফতরে দলবদল অনুষ্ঠানটি হয়েছে। যদিও বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি দিলীপ সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy