বিএসএফের আপত্তি উড়িয়েই আজ শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকে মকড়হাট থেকে সান্ত্রী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় মিলনমেলা করার উদ্যোগ নিলেন বাসিন্দারা। সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশের কয়েক হাজার বাসিন্দা কাঁটাতারের দুধারে দাঁড়িয়ে দিনভর পরিচিত ও আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করবেন।
বিএসএফের ১৩৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সহকারি কমান্ড্যান্ট যোগেশ মদনে বলেন, “নিরাপত্তার কারণে এবছর বিএসএফের তরফে বাসিন্দাদের একাধিকবার মিলনমেলা না করার আবেদন করা হয়। বাসিন্দারা অনড় থাকায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে। কিন্তু আমরা জোর করছি না। তাঁর কথায়, “মেলায় নেশার সামগ্রী-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র পাচারের আশঙ্কা থাকে। নাশকতার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যতটা সম্ভব আমরা নজরদারি রাখব। পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।”
বর্ধমানকান্ডের পর রাজ্যের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মিলনমেলায় আপত্তি জানিয়ে আসছে বিএসএফ। এর আগে বিএসএফের আপত্তিতে কোচবিহার ও মালদহে মেলা,পুজোর মিলন অনুষ্ঠান কোনওটাই হয়নি। কিন্তু এবার বাসিন্দাদের জেদের সামনে পিছু হঠতে হচ্ছে বিএসএফকে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কাঁটাতারের ধারে ছ’ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা দাঁড়িয়ে সৌজন্য বিনিময় করবেন। বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার কোঁচাল এলাকার বাসিন্দারা এপারে আসবেন। রায়গঞ্জের ডিএসপি (ডিআইবি) সুজিত ঘোষ বলেন, “নির্বিঘ্নে মিলনমেলা শেষ করতে বিএসএফ পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে। সীমান্তের আইন মেনে পুলিশ যতটা সম্ভব নজরদারি করবে।” জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে জানিয়েছেন, “মেলার উপর নজর রাখবে প্রশাসন।”
গত এক দশক ধরে মকড়হাটের বাসিন্দারা ওই মেলার আয়োজন করে আসছেন। মকড়হাট এলাকার বাসিন্দা পেশায় চাষি আবদুল রহিম, জব্বর আলি ও ভগীরথ বর্মনরা জানান, তিন দশক আগে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হয়। সেইসময় মকড়হাটের বহু বাসিন্দার আত্মীয়দের জমি ও বাড়ি পড়ে যায় বাংলাদেশে। সেই থেকেই বছরে একবার পরিচিত ও আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্য মিলনমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এবারও দুই পারের বাসিন্দারা কাঁটাতারের উপর দিয়েই টাকা, খাবার, পোশাক ও উপহার আদান প্রদান করবেন। বিএসএফ সূত্রের খবর, বাসিন্দারা নো ম্যানস ল্যান্ডে চাষ করতে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময় ছাড়া কাঁটাতারের ১৫০ মিটারের মধ্যে আসতে পারেন না। বাংলাদেশের দিকে কোনও কাঁটাতার নেই। কাঁটাতারের ওপারে প্রায় দেড়শো মিটার দূরে একটি নদী পার হলেই বাংলাদেশের কোঁচাল গ্রাম। মেলার দিন গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা হাঁটুজল পার হয়ে ভারতের ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ দাঁড়ান। এপারে দাঁড়ান ভারতীয়রা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy