Advertisement
E-Paper

বিয়ে রুখে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পড়শিদের

ভিন রাজ্যের পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক। কিন্তু পড়াশুনা করতে চায় বলে সেই বিয়েতে রাজি ছিল না সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া নাবালিকা পাত্রী। বারণ করেছিলেন প্রতিবেশীরা। দিনমজুর বাবা-মা তাতে আমল দেননি। শনিবার রাতে মালদহের চাঁচলের স্বরূপগঞ্জ রায়পাড়ায় বসেছিল বিয়ের আসর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৪ ০১:২৯

ভিন রাজ্যের পাত্রের সঙ্গে বিয়ে ঠিক। কিন্তু পড়াশুনা করতে চায় বলে সেই বিয়েতে রাজি ছিল না সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া নাবালিকা পাত্রী। বারণ করেছিলেন প্রতিবেশীরা। দিনমজুর বাবা-মা তাতে আমল দেননি। শনিবার রাতে মালদহের চাঁচলের স্বরূপগঞ্জ রায়পাড়ায় বসেছিল বিয়ের আসর। বাধ্য হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়তে হয়েছিল মেয়েটিকে। হাজির ছিলেন পাত্রও। রাত ১০টায় পুরোহিত বিয়ের তোড়জোড় শুরু করতেই বিয়েবাড়িতে হাজির হল পুলিশ। বন্ধ হল বিয়ে। নিমেষে জলে ভেজা চোখ খুশিতে ভরে উঠল মেয়েটির। বাবা ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকায় ছাড়া পেলেও পুলিশ পাত্র-সহ তিন জনকে ধরে। ধৃতেরা হল করণপাল সিংহ, তার বাবা মহীপাল সিংহ ও এক আত্মীয় গম্ভীর সিংহ।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাদনাতলায় বসার আগে এ দিনই তার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কিছু করার অনুরোধ করে পরিচিতের মোবাইল থেকে গৃহশিক্ষককে ফোন করে মেয়েটি। গৃহশিক্ষকও দেরি না করে চাঁচল ১ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি ইন্তেহাসানুল হক রুমনকে তা জানান। কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়ে পরিবারের লোকদের বোঝালেও তাতে ফল না হওয়ায় পুলিশকে ঘটনার কথা জানান রুমন। এ ভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুষড়ে পড়েছে দিনমজুর পরিবারটি। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবেশীরা। মেয়েটির ১৮ বছর বয়স হলে প্রয়োজনে চাঁদা তুলে তার বিয়ে দেবেন বলে পড়শিরা জানিয়েছেন।

মালদহের পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “পুলিশ খবর পাওা মাত্রই ব্যবস্থা নিয়েছে। শুনেছি মেয়েটি পড়তে চায়। ফের তার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পেশায় দিনমজুর নীরঞ্জন গোস্বামীর ৪ মেয়ে দুই ছেলের বড় মেয়ে কাঞ্চন এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। এক প্রতিবেশীর আত্মীয়ের বিয়ের সূত্র ধরে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের কৈমাখাল গ্রাম থেকে পাত্রী খোঁজার জন্য ধৃতরা এলাকায় আসে। পণ দূরের কথা উল্টে বিয়ের যাবতীয় খরচ পাত্রপক্ষ করবে জেনে নীরঞ্জনবাবু পাত্র করণপালের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে স্থির করে ফেলেন। শনিবার তোড়জোড় দেখে বিয়ের কথা জানতে পারে কাঞ্চন। সারাদিন বাবা-মাকে বুঝিয়েও রাজি করাতে না পেরে ছাদনাতলায় বসার আগে সে ফোন করে গৃহশিক্ষককে। গৃহশিক্ষক কার্তিক ঘোষ বলেন, “কাঞ্চেনের ফোন পেয়ে ওর ইচ্ছের কথা জানিয়ে যুব তৃণমূল নেতাকে কিছু করতে বলি।” আর যুব তৃণমূল নেতা রুমন বলেন, “পাত্রীর বাবা-মাকে বলেছি, ওর বিয়ের বয়স হলে চাঁদা তুলে ওর বিয়েতে সাহায্য করব।” কাঞ্চন জানায়, “কষ্ট করে হলেও পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাই।”

teenage marriage swarupnagar roypara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy